ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: শুক্রবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবি জসীমউদ্দীন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহর বাংলোতে ফোটে বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন বিরল প্রজাতির ফুল নাইট কুইন।
রানীর মত সৌন্দর্য নিয়ে রাতের বেলা এ ফুল ফোটে বলে এর নাম ‘রাতের রানি’ বা নাইট কুইন ।
এ ফুলের বৈশিষ্ট্য হলো এর কলি বের হয় পাতা থেকে। প্রথমে পাতার যে কোনো এক পাশে ছোট গুটির সৃষ্টি হয়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গুটিটি বড় হয়ে উঠতে থাকে।
দুই সপ্তাহ সময়ের মধ্যে ছোট্ট গুটিটি পরিপূর্ণ কলিতে রূপান্তরিত হয়। যে রাতে ফুল ফুটবে সেদিন বিকেলে কলিটি অদ্ভুত সুন্দর সাজে সজ্জিত হয়ে ওঠে। সন্ধ্যার পর পৃথিবী অন্ধকারে ছেয়ে গেলে আস্তে আস্তে মেলতে শুরু করে নাইট কুইনের কলি। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একটি দু‘টি করে পাপড়ি মেলতে থাকে। সেই সঙ্গে মিষ্টি এক ধরনের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। এ গন্ধে তীব্রতা না থাকলেও আছে এক ধরনের অদ্ভুত মাদকতা, যা যে কোনো মানুষকে মোহিত করার জন্য যথেষ্ট।
রাতের বুকে যখন পরিপূর্ণ অন্ধকার নেমে আসে তখন অন্ধকারের বুকচিরে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে মেলে ধরে নাইট কুইন। রাত যত বাড়তে থাকে ততই যেন রূপ খুলতে থাকে তার। রাতের রানির মোহময় সৌরভে আকৃষ্ট হয়ে উন্মাদের মতো ছুটে এসে পতঙ্গরা ঝাঁপিয়ে পড়ে তার বুকে।
সন্ধ্যার বুক চিড়ে যার জন্ম, রাত পোহাবার আগেই হয় তার মৃত্যু। পুব আকাশে আলোর রেখা দেখা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই মৃত্যু ঘণ্টা বেজে ওঠে নাইট কুইনের। দিনের আলো সহ্য করতে পারে না রাতের রানী। চারিদিকে আলোকিত হওয়ার আগেই পাপড়িগুলো ম্লান হয়ে নুয়ে পড়ে, গুটিয়ে ফেলে নিজেকে,পরিণত হয় চুপসে যাওয়া মৃত ফুলে।
অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন,এ ফুলের গাছটি ১৯৯৮ সালের দিকে আমার স্ত্রী নিয়ে এসেছিলেন। সেই থেকে গত ১৮ বছর ধরে আমরা এর পরিচর্যা করে আসছি। এই সময়ের মধ্যে আমরা একাধিকবার বাসস্থান পরিবর্তন করলেও সঙ্গেই রেখেছি গাছটাকে।
এত ভালোবাসার গাছটিতে একসঙ্গে এতগুলো ফুল ফোটায় স্বভাবতই উদ্বেলিত তিনি।
এক সঙ্গে দশটি ফুল ফোটায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেলেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আজ ফুল ফুটবে। সন্ধ্যার পর যখন সত্যি সত্যিই কলিগুলো একটি দুটি করে পাপড়ি চোখ মেলতে থাকে, তখন এর সৌন্দর্যই ছিলো অসাধারণ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৫
এসএ/আরআই