ঢাকা: বালিশে মাথা রেখেছেন অনেক আগেই। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না।
ঠিক সময় ও পর্যাপ্ত ঘুমাতে চাইলে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সাত থেকে নয় ঘণ্টা আগের সময়টাতে আপনি কী করছেন বা কী খাচ্ছেন তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রাতে ঘুম না আসার অন্যতম কারণ হলো রাত নয়টার পর এমন কিছু কাজ করা বা খাওয়া যা ঘুমের বিড়ম্বনা ঘটায়। জেনে নিই চলুন।
রাতে ভারী খাবার খাওয়া
সকালে ভারী ব্রেকফাস্ট ও রাতে অল্প খাওয়ার চেষ্টা করুন। রাতে প্রতিদিন একই সময় খান। চেষ্টা করুন রাত নয়টার আগেই রাতের খাবার শেষ করতে। রাতে ভারী ও বেশি খেলে রক্তে শর্করা জমা থাকে ও চর্বিযুক্ত ভারী খাবার হজম হতে অনেক সময় লাগে। ফলে তা শরীরকে জাগিয়ে রাখে অনেক রাত পর্যন্ত। তাই রাতে যথাসম্ভব কম ও হালকা খাবার খাওয়াই শ্রেয়।
অ্যালকোহল সেবন
অনেকের ধারণা, অ্যালকোহল স্ট্রেস কমায় ও ঘুমের অনুভূতি সৃষ্টি করে। কিন্তু অ্যালকোহল সেবন করে ঘুমানো স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই অ্যালকোহলকে না বলুন।
ঘুমানোর আগে মেইল চেক করা
ঘুমানোর আগে ফোনে বা ট্যাবে মেইল চেক করার কারণে সঠিক সময়ে ঘুম নাও আসতে পারে। অনেকে অফিসের কাজের অবশিষ্ট বাড়িতে বসে করেন। এটি উচিত নয়। অফিসের কাজ অফিসেই শেষ করুন। অফিস থেকে ফেরার পর সময়টা নিজের জন্যই বরাদ্দ রাখুন। একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এমনকি নোটিফিকেশন চেক করাও ঘুমের সমস্যা করতে পারে। সমস্যা না হলে রাতে ঘুমানোর আগে ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমাতে পারেন।
প্রিয় কারও সঙ্গে কলহ
রাগ, মনোমালিন্য বা মন খারাপ নিয়ে ভালো ঘুমানো যায় না তা আমাদের সবারই জানা। যারা একটু বেশি ভাবে তাদের এসব একটু বেশি ভাবায়। ফলে অনেক রাত পর্যন্ত মস্তিষ্ক সজাগ থাকে। যদিও শরীর অনবরত ঘুমের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় কিন্তু ঠিকভাবে ঘুমানো সম্ভব হয় না। চেষ্টা করুন হাসি-খুশি থাকতে।
ঘুমানোর আগে সিনেমা দেখা
রাতে ঘুমানোর আগে অনেকেই সিনেমা দেখেন। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত, স্ক্রিনের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে তা শরীরের মেলাটোনিন তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটায়। মেলাটোনিন হচ্ছে, একটি হরমোন যার ফলে আমাদের ঘুম অনুভূত হয়। তাই ঘুমোর যত আগে আপনি আপনার টিভি, ট্যাব বা কম্পিউটারের স্ক্রিন বন্ধ করবেন তত দ্রুত আপনি ঘুমাতে পারবেন।
বই পড়া
ঘুমানোর আগে বই পড়া যেতে পারে। তবে থ্রিলার, রোমান্টিক উপন্যাস বা বুদ্ধিবৃত্তিক কোনো বই পড়লে তা স্বস্তির বদলে মস্তিষ্ককে আরও উত্তেজিত করতে পারে। গবেষকরা দেখেছেন, এমন মানসিক চাহিদা ঘুমে সমস্যা তৈরি করে। তাই ঘুমানোর আগে প্রয়োজন হলে বিনোদনমূলক ম্যাগাজিন ও সাধারণ কোনো গল্পের বই পড়তে পারেন।
ডিনারের পর কফি
ডিনারের পর কফি খাবেন না। কফি খেলে দুপুর ২টার আগে খাওয়া ভালো। গবেষণায় দেখা যায়, দুপুরের আগে কফি খেলে তা রাতে ঘুমে সমস্যা করে না। কারণ ক্যাফেইন শরীরের মেলাটোনিন তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। তাই রাতে কফি খেলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তবে সন্ধ্যার পর হারবাল চা খেতে পারেন।
মাল্টিভিটামিন
অনেক সময় ভিটামিন বি এর বেশি ডোজ নেওয়া হলে সাধারণ ঘুম চক্রে সমস্যা হতে পারে। যদি নিদ্রাহীনতা হয় তাহলে এই ওষুধগুলো সকালে খেতে পারেন। তবে মাল্টিভিটামিন খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালেঅভাবে ব্রেকফাস্ট করে নিতে হবে। কারণ খালি পেটে খেলে তা বমি বমি লাগতে পারে।
ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম পোস্ট চেক করা
অনেকেই রাত জেগে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে থাকে। আবার অনেকেই মনে করেন, ঘুম না আসার আগ পর্যন্ত এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করবেন। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ঘুমানোর যত আগে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো থেকে দূরে থেকেছেন তারা দ্রুত ও পর্যাপ্ত ঘুমিয়েছেন।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৫
এএ