ঢাকা: চিলির তিন তরুণ উদ্যোক্তা আবিষ্কার করেছেন বিশ্বের প্রথম বাইসাইকেল, যা চুরি করা যাবে না। অথবা বলা যায়, লক ভেঙে চুরি করলে সাইকেল হিসেবে এর কোনো উপযোগিতা থাকবে না।
স্টাইলিশ স্টিলের ফ্রেমের এ সাইকেলটি এমনভাবে তৈরি যে গাছ, খুঁটির সঙ্গে সহজে লক করে রাখা যাবে। আর লকের পর সাইকেলটি দেখতে মনে হবে অনেকটা অকেজো।
সাইকেলের মূল বডির তিনটি রডের নিচেরটি খোলা যায়। আর লকটি বেশ অভিনব। সিটসহ খুলে ওই তৃতীয় রডের সঙ্গে কোনো খুঁটির সঙ্গে পুরো সাইকেলটি আটকে রাখা যায়। যদি কোনো চোর এই লক ভেঙে সাইকেলটি চুরি করতে যায় তাহলে সাইকেলটির আর কোনো মূল্য থাকবে না।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে স্মার্ট প্রযুক্তি। চাইলে যে কেউ নিজের স্মার্টফোন থেকে অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে সাইকেলটি লক অথবা আনলক করতে পারবেন। আর সাইকেলটির দাম পড়বে বাংলাদেশি টাকায় ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
এ আবিষ্কারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই তিন তরুণ ৩০০ সাইকেল তৈরির প্রথম অর্ডারও পেয়ে গেছেন।
সাইকেলটি নকশা করার পর ক্রিস্টোবাল ক্যাবেলো (২২), আন্দ্রেজ রই এগারস (২৩) ও জুয়ান জোস (২৪) এক লাখ মার্কিন ডলার মূলধন করেন। যা পরে পণ্য গবেষণা ও উন্নয়নের কাজে লাগে। এরপর তারা ক্রাউড ফান্ডিং ইন্ডিয়েগোগো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রথম ব্যাচের বাইক বিক্রি করেন, যার নাম ইয়েরকা।
উদ্যোগটির সিইও ক্যাবেলো সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা ক্রাউড ফান্ডিংটাকেই নির্ধারণ করেছি। কারণ এটাই বিশ্বব্যাপী পণ্য ছড়িয়ে দেওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায়।
এ প্রচারণার মাধ্যমে তারা এ পর্যন্ত মোট ১শ ৯৭টি বাইক বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই যুক্তরাষ্ট্রে। কিছু নিয়েছে ইউরোপ। মুষ্টিমেয় কিছু নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, হংকং ও নিউজিল্যান্ড। তবে আবিষ্কারক দেশ চিলিতে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ সাইকেল।
ক্যাবেলো জানান, ইউরোপীয় ও উত্তর আমেরিকানরা সাইকেল বেশি ব্যবহার করেন। প্রথম দিকে চারশো ডলার করে একশোটি বাইক বিক্রি হয়েছে। পরে এর দাম বেড়ে হয় পাঁচশো ডলার। তবে স্থানভেদে এর দাম ছয়শো ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
প্রথম দিকে ইয়েরকাস প্রস্তুতকারকদের কোনো লাভ ছিলো না। ক্যাবেলো জানান, বিক্রয়মূল্যের ৫০ শতাংশই বাইক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে। আর বাকি ৫০ শতাংশ গেছে বণ্টন, প্রশাসন ও পেটেন্টের জন্য।
তিনি বলেন, আমরা জানি লাভের আগে ইয়েরকাস মানুষের পরিচিতি পাওয়া বেশি জরুরি। বাইকটির যন্ত্রপাতি তাইওয়ানে তৈরি। স্টিল ফ্রেম ও ফর্ক তৈরি চীনে। আর পুরো সাইকেল তৈরি হয়েছে চীনের সাংহাইতে।
অন্যদিকে ক্রেতারা বাইকটি খুব পছন্দ করছে। তারা বলেছেন, বাইকটি অসাধারণ। এই বাইকটি আমরা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই।
ভিডিও:
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৫
এসএমএন/এএ