বান্দরবান: চারপাশে আর পায়ের নিচে বিস্তীর্ণ সবুজ, মাথার উপর নীল-সাদা মেঘের ওড়াওড়ি। যেন চাইলেই হাতের মুঠোয় ধরা যায় এই পেজো তুলোর মেঘকে।
দিগন্তে যতোদূর চোখ যায় শুভ্র বরফে ঢাকা সবুজ এক মায়ানগরী। এরই মাঝে পাহাড়ের বুক চিড়ে বহমান স্রোতস্বিনী।
অবারিত সবুজ আর সৌন্দর্যের মিশেলে প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া নয়নাভিরাম বান্দরবান। এর রূপ-রসে প্রকৃতিপ্রেমী মাত্রই হবেন মন্ত্রমুগ্ধ...
মেঘ-পাহাড়ের মিতালি
দূরে নীল-সাদা মেঘে ঢাকা পড়া বৃক্ষ-গুল্মের পাহাড়। মন হরণ করে নেওয়া মেঘ-পাহাড়ের অপূর্ব মিতালী। সবুজ পাহাড়ে শীতল মেঘের ওড়াওড়ি কিংবা পাহাড় ঢেকে থাকা মেঘ দেখতে হলে যেতে হবে নীলগিরি অভিমুখে থানচি সড়কে।
জুমচাষ
শরৎ রাণীর আগমনী সুর বাজতে না বাজতেই নীলগিরির পাহাড়ে পাহাড়ে জুমের সমারোহ। চিম্বুক সড়কের ক্রামাদি পাড়া ও অ্যাম্পু পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার প্রতিটি পাহাড়ে এখন জুমের মনকাড়া দোলা।
পাহাড়ের গায়ে জুমের শীষের এ দোলায় উদ্বেলিত জুমিয়ারা। আর কদিন পরেই পাকবে জুমের ধান। জুমের নবান্ন উৎসবে মেতে উঠবে পাহাড়ি পল্লীগুলো।
পাহাড় ঘেঁষা স্রোতস্বিনী সাঙ্গু
কোথাও পাহাড়ের বুক চিরে, কোথাও পাহাড়ের কোল ঘেঁষে অবিরাম বয়ে চলেছে সর্পিল খরস্রোতা সাংগু নদী। দূর পাহাড়ের নীলগিরি আর্মি ক্যাম্প থেকে প্রকৃতিপ্রেমী কারো কাছে তা স্বর্ণের লাভা বয়ে নিয়ে চলা নালা ভেবে ভ্রম হতেই পারে।
পাহাড়ি সড়ক
রুমা-থানচি সড়কের সরু পাহাড়ি পথ। চলে গেছে একে-বেঁকে উঁচু খাড়া পাহাড়ের দিকে। হঠাৎ দেখলে মনে হয় জাদুর তুলির পরশে তৈরি নিপুণ কোনো শিল্পকর্ম।
জুমঘর
চিম্বুক সড়কের ক্রামাদি পাড়া ও অ্যাম্পু পাড়ায় পাহাড়ের পাদদেশে ও চূড়ায় বাঁশ, বেত ও ছনের তৈরি জুমঘর।
জুম চাষের সময়টাতে প্রচণ্ড গরমে ক্লান্তি দূর করতে এখানে বিশ্রাম নেয় জুমিয়ারা। কখনো-কখনো ক্লান্ত কোনো চাষি আগমনী ফসলের আনন্দে গেয়ে ওঠেন ‘হিল্লো মিবো জুমত যায়দে, যাদে যাদে পধত্তুন পিচ্ছি ফিরি চায়, শস্য ফুলুন দেঘিনে বুক্কো তার জুড়ায়’ (পাহাড়ি মেয়েটি জুমে যায়, যেতে যেতে পথ থেকে পেছন ফিরে চায়; শর্ষের ফুল দেখে বুক তার জুড়িয়ে যায়)।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৫
এসআর