ঢাকা: ‘আজি শরত তপনে প্রভাত স্বপনে কী জানি পরান কী যে চায়/ওই শেফালির শাখে কী বলিয়া ডাকে বিহগ বিহগী কী যে গায় গো/আজি মধুর বাতাসে হৃদয় উদাসে, রহে না আবাসে মন হায়/কোন কুসুমের আশে কোন ফুলবাসে সুনীল আকাশে মন ধায় গো। ’
শরত এসেছে আগেই।
ষড়ঋতুর এ দেশে প্রতিটি ঋতুরই রয়েছে আলাদা পরিচায়ক। আর ঋতুর পার্থক্য ফুটে ওঠে ফুলে। শরতে সাদা কাশফুল আর শিউলির আধিপত্য ছাড়াও ফোটে আরও অনেক সহচরী ফুল। একটু ঘুরে আসা যাক শারদীয় কানন থেকে।
কাশফুল
ঝকঝকে নীলাকাশ। নদীর পাড়ে সারি সারি সাদা কাশফুল। মৃদু বাতাস দোলা দিচ্ছে তাদের নরম পাপড়িতে। এই তো চিরচেনা শরত। কাশফুল সাধারণত জলাভূমি, নদীতীর ও পতিত জমিতে জন্মে। গুচ্ছমূল জাতের এ উদ্ভিদ প্রায় ১০ ফুট পর্যন্ত ও এর ফুল ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
শিউলি
শরতের শান্ত ভোর। শিশিরভেজা সবুজ ঘাসের বিছানায় রাশি রাশি শিউলি ফুল। যেন খসে পড়েছে রাতের ঝলমলে তারা। মাটিতে মিশে গেছে তার গন্ধ। ছোট ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে নামে শিউলি ফুল কুড়োতে। আর পাল্লা দিয়ে চলে মালা গাঁথার প্রতিযোগিতা। জাফরানি বোঁটার দুধসাদা ছয় পাপড়ির এ ফুল রাতে ফোটে ও সকালে ঝরে পড়ে।
বেলি
রাতের আকাশে তারার আনাগোনা আর বাতাশে বেলি ফুলের ঘ্রাণ। গাঢ় সবুজ পাতার ফাঁকে একথোকা বেলিফুল। কয়েক পরতে তার পাপড়ি সাজানো। বেলি বর্ষার ফুল হলেও ফোটে শরতেও। আকার অনুযায়ী এর কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে।
ছাতিম
সাতটি পাতার ভিতর একগুচ্ছ সাদা ফুল। হালকা সবুজ ফুলের বোঁটা। সেই সবুজের খানিক আভা পড়েছে ফুলের উপরেও। সাধারণত আর্দ্র কাদামাটি ও স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে এ ফুলগাছ বেড়ে ওঠে। এর আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়।
দোলনচাঁপা
বর্ষার ফুল দোলনচাঁপা শরতেও ছড়ায় তার সুবাস। শরতের সন্ধ্যায় দোলনচাঁপার সাদা পাপড়ি যেন আওড়ায় প্রিয় কোনো প্রেমকাব্য। সন্ধ্যা নামি নামি করতে শুরু করলে পাপড়ির ভাঁজ মেলে এই ফুল। জেগে থাকে পরদিন সকাল পর্যন্ত। দোলনচাঁপা মোট ৪০ প্রজাতির হয় তবে সাদা ও রক্তলাল দোলনচাঁপাই আমাদের দেশে বেশি চোখে পড়ে।
জবা
জবা বাহারি রঙের হয়। লাল, সাদা, গোলাপি, কমলা ইত্যাদি। এর বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। জবা গ্রীষ্ম ও শরতে ফোটে। আমাদের দেশে সাদা, লাল ও গোলাপি জবা বেশি দেখা যায়। এ ফুল চওড়ায় চার ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৫।
এসএমএন/এসএস