ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

সোনালি আঁশের মানুষেরা

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন ও স্বপন চন্দ্র দাস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৫
সোনালি আঁশের মানুষেরা ছবি: নূর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিরাজগঞ্জ থেকে ফিরে: পাটের সঙ্গেই বসতি। সেই শিশুকাল থেকে আজ অবধি।

গ্রামের প্রায় প্রতিটি মানুষের সঙ্গে ‌‌সোনালি আঁশের পাট যেন শৈশবসূত্রে গাঁথা।  

পাটগাছ থেকে আঁশ ছাড়াতে ছাড়াতে গুনগুনিয়ে বেসুরো কণ্ঠে গান গাইছিলেন এমনই এক চাষি। চোখে-মুখে হাসির রেখা। বোঝা যাচ্ছিলো সোনালি আঁশ পাট এ হাসির রহস্য।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের যমুনা নদীর ভাঙনকবলিত শিমলা, বালিঘুগরী ও পাঁচ ঠাকুরী এলাকার পাটচাষিদের আনন্দও এ চাষির মতো উপচে পড়ছিলো।

ঝড়-ঝঞ্ঝা, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাঠে মাঠে সোনালি আঁশ ফলানো কৃষকের মুখে হাসি থাকবে না তো আর কার মুখে হাসি থাকবে?

শিমলা গ্রামের পাটচাষি আমিনুল ইসলাম, বালি ঘুগরীর শুকুর আলী, পাঁচ ঠাকুরীর কৃষক নুরুল, আব্দুল হামিদসহ অনেকেই জানান, এপ্রিল-মে মাসে পাট বোনা হয়। পাটগাছ ২/৩ ইঞ্চি হওয়ার পর নিড়ানি দিতে হয়। কাটা হয় ৫/৭ ফুট লম্বা হওয়ার পর। তারপর ১৫/২০ দিন পানিতে ডুবিয়ে রেখে পচা পাটগাছ থেকে ছাড়ানো হয় সোনালি আঁশ।

শিমলার কৃষক শাহ আলী জানান, এবছর আমাদের শ্রম সার্থক হয়েছে। বাজারে সঠিক দাম পেয়েছি। প্রথম দিকে পাট ২’ হাজার ২২শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

অপর কৃষক আব্দুল হামিদ জানান, পাটের মূল্য প্রথম দিকে বেশি থাকলেও এখন কিছুটা কমেছে।

শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের আগনুকালী গ্রামেও রয়েছে পাটাশ্রয়ী মানুষগুলো বেঁচে থাকার সংগ্রাম।

বিলের পানিতে নেমে পাটগাছের শরীর থেকে আঁশ ছাড়াতে ছাড়াতে আলতাফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় ২০/২২ বছর ধরে পাট ছ‍াড়ানো কামলার কাজ করছি। প্রতিদিন ২শ’ টাকা করে মজুরি পাই। সকাল আটটা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত কাজ। চার ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে আমার সংসার।

অপর কৃষক আবদুর রাজ্জাক বলেন, পাটের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পাটকাঠি জ্বালানি ও ঘরের বেড়ার কাজে লাগে। আর পাট দিয়ে গরুর দড়ি, বেড়া বা বোঝা প্রভৃতি বাঁধার জন্য দড়ি তৈরি করা হয়।

সোনালি আঁশ বিক্রি, কখনো এসব জিনিস তৈরি করেই চলছে তাদের জীবন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৫
বিবিবি/এএ

** শত বছরের সুখ-দুঃখের সাক্ষী যে

** আরে ভাই, একটু তো পড়বেই!
** তাঁতের দেশে সড়কে দুর্ভোগ
** ‘মেম্বর-চেয়ারম্যান দেখপার আইসে না’
** নড়বড়ে সাঁকোতে দিনের পর দিন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।