ঢাকা: রবি ঠাকুরের কথা মতো ‘দাঁড়াও, মন, অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড-মাঝে আনন্দসভাভবনে আজ’ দাঁড়িয়ে দেখবেন নাকি? আচ্ছা বেশ। ভাবসাগরে সে আপনি চাইলে দাঁড়াতে-বসতে সবই পারেন।
কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বলতে গেলে, এই আকাশ-ভরা সূর্য-তারার মাঝে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, পুরো বিষয়টি ভাবনাতে আনাই মুশকিল। বলা ভালো, অসম্ভব! দূর-দূরান্তে লক্ষ-কোটি গ্রহ-নক্ষত্রের সমাগম। এ অনন্ত নক্ষত্রবীথিতে যেখানে পৃথিবীই অণু-পরমাণুসম, সেই আসরে আপনি কোথা?
শুধু পৃথিবীর কথাই যদি বলি, বিশ্বভরা এ প্রাণের তিনভাগ জল ও একভাগ স্থল। এই সামান্য অংশের (আমাদের জন্য সুবিশাল) রহস্যই এখনও অধরা রয়ে গেছে, বাকিসব ছেড়েই দিন। আপনিও হয়ত বলবেন, কী দরকার বাপু এত ভেবে! মহাবিশ্ব কীভাবে চলে তা দিয়ে আমার কী।
কিন্তু গার্ডিয়ান বলছে ভিন্ন কথা। বিখ্যাত এ সংবাদ মাধ্যমটি মাত্র এক মিনিট ৫০ সেকেন্ডেই সেই সুব্যবস্থা করে দিয়েছে। তাদের ‘মেড সিম্পল’ সিরিজে সম্প্রতি যোগ হয়েছে তত্ত্বীয় পদার্থ ও মহাকাশতত্ত্ববিদ স্টিফেন হকিংয়ের ‘থিওরি অব এভরিথিং’। যুক্তরাজ্যভিত্তিক অ্যানিমেশন স্টুডিও ‘স্ক্রিবেরিয়া’ এটিকে আবার ভিডিওতে রূপান্তর করেছে।
এ ভিডিওতেই মিলবে মুশকিলে আসান। এখানে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কীভাবে চলছে সেটি খুব সহজেই বোঝানো হয়েছে। এজন্য আপনাকে হকিংয়ের ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ও পড়তে হবে না আবার আপনার জোতির্বিজ্ঞানী হওয়ারও প্রয়োজন নেই। বিগ ব্যাং, মহাবিশ্ব, ছায়াপথ, সৌরজগত, গ্রহ-নক্ষত্র, পৃথিবী ও মানুষ, মানে আপনি- কে কীভাবে চলছে, কার কী ভূমিকা সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আর তর না সইলে অর্থাৎ ভিডিও দেখতে হলে চলে যান একদম নিচে। অন্যথায় বিশেষ বিরক্ত না হলে পুরোনো কিছু তথ্যে নতুন করে চোখ বোলাতে পারেন।
চিরায়ত পদার্থ বিজ্ঞান অনুযায়ী, মহাবিশ্বের প্রতিটি প্রক্রিয়াই তার সৃষ্টি থেকে একই ধরনের প্রাকৃতিক নিয়ম ও কয়েকটি নির্দিষ্ট ধ্রুবক দ্বারা নির্ধারিত। বিগ ব্যাং তত্ত্ব অনুসারে, এর আয়তন ক্রমবর্ধমান। তবে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন তত্ত্বে, আমাদের দৃশ্যমান মহাবিশ্বের পাশাপাশি আরও অনেক মহাবিশ্ব অর্থাৎ অনন্ত মহাবিশ্ব থাকার সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে।
বর্তমান বিশ্বতত্ত্বের মডেল অনুযায়ী, মহাবিশ্বের বর্তমান বয়স এক হাজার ৩শ ৭৫ কোটি বছর। এ মহাবিশ্বের দৃশ্যমান অংশের ব্যাস প্রায় নয় হাজার তিনশো কোটি আলোক বর্ষ।
জ্যোতির্বিদরা মনে করছেন, দৃশ্যমান মহাবিশ্বে প্রায় ১০ হাজার কোটি গ্যালাক্সি রয়েছে। সূর্য আমাদের নিকটবর্তী নক্ষত্র। সূর্য থেকে আলো আসতে প্রায় আট মিনিট সময় লাগে। কাজেই সূর্যের দূরত্ব হচ্ছে আনুমানিক আট আলোক মিনিট। আর আমাদের সৌর জগতের আকার হচ্ছে ১০ আলোক ঘণ্টার মতো।
আমাদের পৃথিবী ও সৌরজগত হচ্ছে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির বাসিন্দা। সূর্য থেকে মিল্কিওয়ের কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৩০ হাজার আর ব্যাস এক লাখ আলোক বর্ষ।
মিল্কিওয়ের পাঁচ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ আলোক বর্ষের মধ্যে রয়েছে আমাদের প্রতিবেশী গ্যালাক্সিগুলো। এর মধ্যে বড় দুই গ্যালাক্সি হলো- অ্যান্ড্রোমিডা ও M33। অ্যান্ড্রোমিডা আমাদের নিকটবর্তী সবচেয়ে বড় গ্যালাক্সি। এর দূরত্ব হচ্ছে ২৫ লাখ আলোক বর্ষ।
এবারকার মতো থাক। অনেক হলো তথ্য-উপাত্ত। এবার চটজলদি দেখে নিন মহাবিশ্বের কাণ্ডকারখানা।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৫
এসএস