ঢাকা: কথায় আছে, পরতে হয় পরের আর খেতে হয় নিজের রুচিতে। ঠিক তাই, প্রত্যেকে তার নিজের মনখুশি খাবে এটাই স্বাভাবিক।
আমেরিকানরা যেমন লাঠিতে গেঁথে কড়া ফ্রাই খেতে ভালোবাসেন। ব্রিটিশদের আবার ছুরি-কাঁচি ছাড়া মুখে কিছু ওঠে না।
সে যে যার শান্তিমতো খাবে তাতে আর এমন কী! কিন্তু খাওয়ার আদবকেতা যখন কোনো জাতির আচার-বিচার বা প্রথা হয়ে দাঁড়ায় তখন ভিন্ন কথা। এ নিয়ে পাগলামিও কম নেই। অবশ্য- এক দেশের বুলি, অন্য দেশের গালি!
তাহলে বিশ্বের মানচিত্র ঘুরে সবচেয়ে অদ্ভুত সব খাদ্যপ্রথাগুলো চেখে নেওয়া যাক।
থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডে কাঁটাচামচ দিয়ে খাবার মুখে তোলাকে অভদ্র আচরণ হিসেবে ধরা হয়। মূলত, কাঁটাচামচ তারা চামচে খাবার ভালোভাবে নিতে ব্যবহার করে থাকেন। এরপর চামচের মাধ্যমে খাবার মুখে দেন। ১৮৯৭ সালে ইউরোপ ভ্রমণের পর রাজা চুলালংকর্ন থাইল্যান্ডে চামচ-কাঁটাচামচের প্রচলন ঘটান। কিন্তু কাঁটাচামচ বেচারা কোনো এক অজানা কারণে ‘অভদ্র’ হয়ে গেছে।
জাপান
শব্দ করে নুডলস আর সুপ খাওয়ার রীতি জাপানে। হ্যাঁ, গবগব করেও খেতে হবে। এটিই তাদের ঐতিহ্য। তাদের মত, গরম খাবার খাওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো কৌশল আর নাকি হতেই পারে না! মজার ব্যাপার হলো, এরকম ‘পাগলামি’ খাওয়া খেলেই আপনাকে সবচেয়ে সুবোধ-শিষ্ট হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
ভারত-মধ্যপ্রাচ্য
ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে বাম হাত দিয়ে খাওয়া নিষিদ্ধই বলা চলে। ডান হাত সবসময় খাবার খাওয়া, অভিজাত ও শুভ কাজে ব্যবহৃত হয়। বাম হাত বরাদ্দ শুধু পরিষ্কার কার্যে।
দক্ষিণ কোরিয়া
দেশটিতে যতক্ষণ না পর্যন্ত সবচেয়ে বয়ঃজ্যেষ্ঠ কেউ মুখে খাবার না তুলবেন, ততক্ষণ কেউ খাওয়া শুরু করেন না। মজার ব্যাপার হলো, টেবিলে যদি জমজ কেউ থেকে থাকেন তাহলে যিনি আগে জন্মেছেন, হোক সেকেন্ড বা মিনিটের ব্যবধান- তারই শুরু করার নিয়ম।
ইতালি
ইতালিতে ভুলেও কখনও সি-ফুডের সঙ্গে পনির দিতে বলবেন না! সেদেশে মাছের সঙ্গে পনির মেশানো রীতিমতো মহাপাপ হিসেবে বিবেচিত।
কানাডা
উত্তর কানাডার কিছু আদিবাসী গোষ্ঠীতে খাওয়ার পর বায়ু ছাড়াটাই ঐতিহ্য। বেশ মজার না, কাউকে বাড়িতে ডেকে আদর-আপ্যায়ন করে খাওয়ালেন, তিনি আপনার প্রতি সম্মান ও শুভেচ্ছা প্রকাশ করছেন বায়ু ছেড়ে!
চীন
চীনে খাবারের পাত্রে চপস্টিক আটকে রাখাটাই অভদ্রতা। এভাবে মৃতের প্রতি আচারানুষ্ঠানিক খাবার উৎসর্গ করা হয়। এছাড়া চপস্টিক দিয়ে কাউকে নির্দেশ করা, কারও দিকে তাক করে কথা বলা বা খাবারের পাত্রে টুংটাং করাটাও অভদ্র আচরণ বলে বিবেচিত হয়।
খালি প্লেটের রকমফের
বিভিন্ন দেশে খালি প্লেটের অর্থ বিভিন্ন রকম। ভারত ও জাপানে, খাবার শেষ করে প্লেট খালি করাটাই নিয়ম। এতে নিমন্ত্রণকারী বুঝবেন, আপনি খাবার উপভোগ করেছেন।
চীনে আবার উল্টো। খালি প্লেট মানে আপনার এখনও খাওয়া বাকি বা আপনাকে ঠিকমতো খাওয়ানো হয়নি।
বেদুইন সংস্কৃতিতে আবার আপনার পেয়ালা শেষ হওয়া মাত্রই পাত্র পূর্ণ করে দেওয়া হবে। না দেওয়াটাই অশোভন। আপনি পেয়ালা নাড়িয়ে যতক্ষণ না বোঝাবেন, ব্যাস, আর নয়- ততক্ষণ চলতেই থাকবে।
মোরাল অব দ্য স্টোরি তাহলে কী? হ্যাঁ, ভিনদেশে ভ্রমণের আগে অবশ্যই জেনে নিন তাদের খাদ্যপ্রথা ও আচার-বিচার। নাহলে খাবার তো পাবেনই না, মারও পড়তে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ০২১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৫
এসএস