ঢাকা: দেখতে শামুকের মতোই। হলদে-সোনালি পুরু খোলসে ঢাকা শরীর।
অ্যালোনজিলাস স্ক্রোবিকুলেটাস মূলত নজিলাস (সামুদ্রিক ঝিনুক) গোত্রীয়। বিজ্ঞানীরা জানান, চলতি বছরের আগস্টের শুরুর দিকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের পাপুয়া নিউগিনি উপকূলে পাওয়া গেছে এ বিরল প্রাণীটি। তারা আরও জানান, এখন থেকে তিন দশক আগে ওই এলাকাতেই এ প্রাণীটির প্রথম সন্ধান পাওয়া যায়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ‘জীববিজ্ঞান ও পৃথিবী এবং স্পেস বিজ্ঞান’ বিষয়ক অধ্যাপক পিটার ওয়ার্ড জানান, অ্যালোনজিলাসের খোলস বিজ্ঞানের পরিচয়ে আসে সতেরশো সালে। তবে এর নরম অংশ ও এর জীবন্ত কোষ সম্পর্কে ১৯৮৪ সালের আগে জানা যায়নি। পেনসিলভানিয়ার ব্রেন মাওয়ার কলেজের ‘ভূতত্ত্ব’ বিভাগের অধ্যাপক ব্রুস সনডার্স প্রাণীটি শনাক্ত করেন। জানান ওয়ার্ড।
ওই বছর সনডার্সের কয়েক সপ্তাহ পর ওয়ার্ড এ প্রাণীটি দেখেন বলে জানান তিনি। তারপর দীর্ঘ ৩১ বছর পর চলতি বছরের আগস্টের প্রথম দিকে প্রাণীটির ফের দেখা পান তিনি।
বিজ্ঞানীরা বিরল এ প্রাণীটিকে নজিলাস বর্গভুক্ত করেছেন। কারণ মারা যাওয়ার পর এদের খোলস শরীর ছাড়িয়ে জলে প্রবাহিত হয়। এমনকি এর লোমশ অংশগুলোও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়। তবে অন্যান্য নজিলাস ও অ্যালোনজিলাসের খোলসে পার্থক্য রয়েছে।
ওয়ার্ড জানান, খোলস পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সামুদ্রিক শামুক প্রজাতির মধ্যে অ্যালোনজিলাসের খোলস দেখতে পুরোপুরি ভিন্ন।
এছাড়াও অ্যালোনজিলাসের খোলসের রং ও গঠনবিন্যাস অন্যান্য সাধারণ নজিলাসের চেয়ে স্বতন্ত্র। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, নজিলাস পমপিলিয়াসের খোলসে সাদা ও রক্তবর্ণের স্ট্রাইপ থাকে। অন্যদিকে অ্যালোনজিলাসের পুরো খেলসজুড়ে রয়েছে উজ্জ্বল কমলা-হলুদ রং। এই ভিন্নতার জন্য তাদের নামের শুরুতে গ্রিক উপসর্গ ‘অ্যালো’ ব্যবহার করা হয়েছে। যার অর্থ ‘অন্য’।
এছাড়াও এদের দেহ আঁঠালো লোম দিয়ে ঢাকা বলে মাছেরা সহজে তাদের শিকার করতে পারে না। বরং অ্যালোনজিলাস মৃত প্রাণিভোজী হওয়ায় এরাই বড় মরা মাছের শরীর খুঁটে খায়।
নজিলাসের সঙ্গে মিল থাকলেও অ্যালোনজিলাস সম্পূর্ণ নতুন প্রাণী। এর ডিএনএ পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতে এদের আগমন এক থেকে দুই মিলিয়ন বছর আগে। কিন্তু নজিলাস পৃথিবীতে এসেছে ডায়ানোসর আসার আগে। সুতরাং, বলা ভালো এরা নজিলাসের পরবর্তী নিকটাত্মীয় ।
অ্যালোনজিলাস সমুদ্রের অগভীর জলের পাথুরে শিলার কছাকাছি বসবাস করে। দুর্বল সাঁতারু বলে খুব একটা সাঁতার কাটতে পছন্দ করে না এরা। শুধু পাথুরে দেওয়ালের কোটরে প্রবেশ ও বের হয়েই জীবন পাড়ি দেয় অ্যালোনজিলাস।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৫
এসএমএন/এএ