ডাকিনিবিদ্যা, প্রেতসাধনার মতো কুসংস্কার থেকে এখনও মুক্ত হয়নি পৃথিবী। পাশের দেশ ভারতে এখনও অসহায় আদিবাসী নারী-পুরুষকে ‘ডাইন’ বা ‘ডাইনী’ অপবাদ দিয়ে পুড়িয়ে, কুপিয়ে মারার ঘটনা প্রায়শই ঘটতে দেখা যায়।
তাজিক পার্লামেন্ট সেবার শাস্তি হিসেবে সংশ্লিষ্টদের জরিমানার ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু দেখা গেল তাতেও ভূতের ওঝা ও গণকদের দৌরাত্ম্যথামছে না। ‘সোজা আঙ্গুলে ঘি ওঠে না’ দেখে এবার তাই আরো শক্তহাতে এসব অপবিদ্যাকে মোকাবেলা করতে চলেছে দেশটির সরকার ও পার্লামেন্ট।
ডাকিনীবিদ্যা, জাদুবিদ্যা, গণকবিদ্যা ও হাতুড়ে চিকিৎসার পথ বন্ধ করতে তাজিক পার্লামেন্ট এবার একটি সম্পূরক আইন করতে যাচ্ছে। এই আইনবলে দোষী ব্যক্তিদের জরিমানার পাশাপাশি ৭ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। গত বুধবার এ সংক্রান্ত একটি বিল পার্লামেন্টে পেশ করা হয়েছে। পরদিন বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় তাজিক টেলিভিশন এই মর্মে একটি সংবাদ প্রচার করেছে।
মূলত হাতুড়ে চিকিৎসক ও গণক নামধারীদের অপতৎপরতা সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই তাজিক এমপিরা এই কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছেন। মধ্য এশীয় এই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটির স্বল্প শিক্ষিত মানুষের কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসকে পুঁজি করে এসব অপবিদ্যার চর্চাকারীরা নানা চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে লাভজনক ব্যবসা ফেঁদে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে। এদের কারণে আধুনিক চিকিৎসার বদলে সাম্প্রতিককালে মানুষের মধ্যে এসবের দিকে ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে। অগত্যা এবার জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
নিন্দুকেরা অবশ্য বলছে, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা ৬২ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ইমুমালি রাখোমন তার সরকারের অপকীর্তি, সীমাহীন লুটপাট ও স্বৈরশাসন থেকে বিশ্ববাসীর চোখ অন্যদিকে ফেরাতেই এহেন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছেন। বলা বাহুল্য, মধ্য এশিয়ার বেশির ভাগ মুসলিম দেশের মতো তাজিকিস্তানেই চলছে স্বৈরতন্ত্র। ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধীদের দলনে রাখোমন সরকারের ব্যাপক বদনাম রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
জেএম