ঢাকা, শনিবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

দেশ এগিয়ে, জুলহাস কেন পিছিয়ে থাকবে!

আবাদুজ্জামান শিমুল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৫
দেশ এগিয়ে, জুলহাস কেন পিছিয়ে থাকবে! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কালো প্যান্ট, কালো জুতা, গোলাপি শার্ট, গলায় কফিরঙা টাই, ‍হাতে ঘড়ি, পকেটে কলম, চোখে হালকা ফ্রেমের চশমা। মাঝারি গড়নের স্বাস্থ্যের এ লোকটিকে ঘিরেই ফুটপাতে জমে আছে জটলা।

পথচারীদের চোখেও উৎসুক দৃষ্টি!

এটুকু শুনে মনে হতে পারে, এ নিয়ে ভাবার কি আছে! কোনো করপোরেট কর্মজীবী হবেন।

করপোরেট, কিন্তু জুলহাস হওলাদার বেছে নিয়েছেন তার নিজের প্রতিষ্ঠান। সেখানে তিনিই প্রধান নির্বাহী।

গত তিন বছর যাবৎ রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনে যাত্রী ছাউনির পাশে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। আর ভোজন রসিকদের মুখে তুলে দেন সুস্বাদু ঝাল মুড়ি।

তবে জুলহাস মোটেও বিব্রত নন। তার বক্তব্য, বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, আমি কেন পিছিয়ে থাকবো! আমার বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে জীবন বাজি রেখে এ দেশ স্বাধীন করেছেন। সেই দেশ আজ এগিয়ে গেছে, আমিও বসে থাকবো না।

জুলহাস শরীয়তপুর জেলার ডামুন্ডা থানার ঢানোকাঠি গ্রামের মৃত তসলিম হাওলাদারের ছেলে।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, কেউ শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা জানতে চাইলে দুষ্টুমি করে বলি, আমি মাস্টার্স পাস। আরও কিছু জানার দরকার হলে আমার ব্যক্তিগত সহকারীর (পিএ) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

লেখাপড়া শেখার সুযোগ হয়নি। কেবল ‍নাম স্বাক্ষর করতে পারি, মোবাইলের নম্বর চিনি। ভালো চাকরির সুযোগ নেই, তাই ঝাল মুড়ি বিক্রি করি।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিক্রি করলে কোনো দিন এক হাজার, কোনো দিন আবার ১২শ’ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে। তা দিয়ে চারজনের সংসার চলে যায়।

তার পোশ‍াক সম্পর্কে জানতে চাইলে ‍জুলহাস বলেন, নিজে একটু পরিষ্কার হয়ে থাকলে ভোক্তারাও স্বাস্থ্যকর খাবার পায়, বিক্রিও ভালো হয়। তাই এমন পোশাক পরি।

পান্থপথ এলাকার কাজী পাড়া ১৭ নম্বর সড়কে একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি।

সংসারে রয়েছে স্ত্রী সুমাইয়া। আট বছর বয়সী ছেলে সোলাইমান আর তিন বছর বয়সী মেয়ে জিদনী আক্তার। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ছাত্র সোলাইমান শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও তাকে নিয়ে স্বপ্নে শেষ নেই জুলহাসের।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।