মাউন্ট এলব্রুস। ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া।
একজন ভারোত্তোলকের জন্য ৭৫ কেজি ওজন তোলাটা নস্যি! কিন্ত পিঠে লোহার বারবেল চাপিয়ে পার্বত্যপথের বিপদসঙ্কুল খাড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ঊর্ধ্বপানে এগিয়ে যাওয়ার চিন্তা? পাগল ছাড়া এমন বিপজ্জনক চিন্তা কারই বা মাথায় আসবে!
কিন্তু রাদিচেভ ‘জীবন-মৃত্যু পায়ের ভৃত্য’—মনোভাব নিয়ে সেটাই করে দেখালেন। কাণ্ডটি করার আগে তিনি অতিশয় কষ্টকর অনুশীলনে নামেন। প্রতিদিন কম করেও দু’বার কঠোর অনুশীলন করে গেছেন। প্রতিদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে পিঠে ১০ কেজি ওজন নিয়ে টানা একঘণ্টা করে রাস্তায় দৌড়াতেন। এরপর সন্ধেবেলা জিমে গিয়ে চলতো কঠিনসব ব্যায়াম। এভাবে শরীর থেকে ২০ কেজি ওজন ঝরিয়ে পিঠে ৭৫ কেজি ওজনের একটা বারবেল চাপিয়ে পর্বতারোহণের জন্য নিজেকে ফিট করে তোলেন।
পর্বতারোহীরা পিঠের ব্যাকপ্যাকে ২৫ থেকে বড়জোর ৩০ কেজি ওজন চাপিয়ে পর্বতারোহণ করেন। কিন্তু রোদিচেভ চাপালেন ৭৫ কেজি—তাও আবার লোহার বেঢপ একটা বারবেল। পর্বতারোহণের ইতিহাসে এমন ঘটনা এটাই প্রথম।
রোদিচেভ রাশিয়ার শীতলতম শহর মুরমানস্কের বাসিন্দা। বড় ধরনের শারীরিক ঝুঁকিটা তিনি নিয়েছেন সাধারণ মানুষের মধ্যে ভারোত্তোলনের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে দেবার মানসে। তিনি জানতেন এটা করতে গিয়ে বন্ধুর-পিচ্ছিল পথে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে তার ভবলীলা সাঙ্গ হতে পারে যে কোনো সময়। গড়ে ঘণ্টায় ৫০ মিটার পথ পেরিয়েছেন, আবার কখনো কখনো পথ এতোই বিপজ্জনক ছিল যে ঘণ্টায় মাত্র ১৫ মিটার করে এগোতে হয়েছে তাকে। এভাবে টানা ৮দিন পর গত ৬ সেপ্টেম্বর তিনি চূড়া জয় করেন। যে বারবেলটি নিয়ে তিনি তার লক্ষ্যপূরণ করলেন, সেটি এখন স্যুভেনির হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে এলব্রুসচূড়ায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৫
জেএম