কথায় বলে, ‘যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ’। কবরে যার এক পা সে-ও চায় বাঁচতে; আরো ভালোভাবে বাঁচতে।
১০৫ বছর বয়সেও তিনি সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেন। নিজের দেশের সন্ত্রাস-সহিংসতা ও যুদ্ধ-সংঘাত আর ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচতে অন্য লাখো লাখো শরণার্থীর মতো তিনিও পাড়ি জমিয়েছেন ইউরোপে। সারা দুনিয়ার গণমাধ্যমে তিনি আজ খবরের শিরোনাম: ‘105-year-old Afghan refugee seeks better life in Europe.’
আফগানিস্তানের সহিংসতাদীর্ণ কুন্দুজ প্রদেশের বাসিন্দা এই দাদিমার নাম বিবিহাল উজবেকি। পায়ে হেঁটে, মানবপাচারকারীদের নৌকায় চড়ে হাজার হাজার মাইল পেরিয়ে অবশেষে তিনিও পৌঁছেছেন ইউরোপে; সুখী সুন্দর নিরাপদ এক ভবিষ্যতের আশায় –‘ to search for a happier, safer future in Europe.’ তার গন্তব্য আঙ্গেলা মেরকেলের দেশ জার্মানি হলেও আপাতত তিনি এখন আছেন ক্রোয়েশিয়ার ওপাতোভাচে। ১০৫ বছর বয়সের নাজুক শরীর তার। তাই এতো কষ্টের ধকল সয়নি। মঙ্গলবার ছেলে, নাতি নাতনী ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সার্বিয়া সীমান্ত দিয়ে তিনি যখন ক্রোয়েশিয়ায় প্রবেশ করেন তখন তাকে স্ট্রেচারে করে নেওয়া হয় সেখানকার শরণার্থী শিবিরে।
তার পাঁচ ভাগের একভাগ যাদের বয়স তাদের জন্য পাহাড়, সমুদ্র, বিস্তৃত জঙ্গল আর মরুভূমি পার হয়ে ইউরোপে এসে পৌঁছানোটা কঠিন কাজ হলেও তিনি দিব্যি তা করে দেখিয়েছেন। রেডক্রসের তাঁবুতে তাকে যখন নিয়ে যাওয়া হলো তখন দোভাষীর সহায়তায় ফার্সি ভাষায় তিনি সংবাদ মাধ্যমকে যা বললেন তাতে সবাই হতবাক: ‘আমার পায়ে ব্যথা হচ্ছে, তবে আমি বেশ আছি!’ এখন বলুন, আপনি আমি এই আফগান দাদিমার নখের যোগ্য কি হতে পারবো কখনো? জয়তু দাদিমা!
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
জেএম