বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও দক্ষতা বিনিময়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তার ঢাকা সফরকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে যে ঐতিহাসিক বক্তব্য রেখেছেন এবং দুই দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি বিনিময়ের যে নতুন নতুন ধারনা তুলে ধরেছেন তার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে এর অগ্রযাত্রা।
মনমোহন সফরে তৈরি পোষাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক বেসরকারি সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রতিষ্ঠান বিজিএমইএ ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি এবং ভারতের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজির মধ্যেও দক্ষ জনবল উন্নয়নে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
এ দুটি চুক্তির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ভারতে গিয়ে পড়াশোনা ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পাবে। ফ্যাশন বিষয়ে ভারতের শিক্ষার্থীরা কাজ করবে বাংলাদেশের পোষাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এর মধ্যে দিয়ে নতুন আলোর দেখা পাচ্ছেন উভয় দেশের শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকবৃন্দ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চুক্তিতে আছে: শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বিনিময়, যৌথভাবে গবেষণায় অংশগ্রহণ, শিক্ষামূলক সভা-সেমিনারে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া, উভয় দেশের কোর্স কারিকুলাম নিয়ে আলোচনা করা, দক্ষতা বৃদ্ধিতে শর্ট কোর্স চালু করা ইত্যাদি।
এতে করে উভয় দেশের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিকমানে পৌঁছাতে পারবে বলেও সবাই আশা করছে। এছাড়াও দুই দেশের সংস্কৃতিকে পরিচয় করিয়ে দিতে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে নিয়মিত আয়োজন করা হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ফলে দু দেশের নতুন প্রজন্মের মধ্যে তৈরি হবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
অন্যদিক বেশকয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের পছন্দে বিষয় হয়ে উঠেছে ‘ফ্যাশন ডিজাইনিং এবং ফ্যাশন টেকনোলজি’। এ বিষয়ে বহুদিন ধরে কাজ করছে তৈরি পোষাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক বেসরকারি সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রতিষ্ঠান ‘বিজিএমইএ ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (বিআইএফটি)’।
বিআইএফটি এবং ভারতের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজি (এনআইএফটি) যৌথ উদ্যোগে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিনিময়ের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধিতে এক সঙ্গে কাজ করবে। বিশেষ করে বাংলাদেশে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হবে বলে এ চুক্তিতে উল্লেখ আছে।
উভয় প্রতিষ্ঠান যৌথ উদ্যোগে গবেষণাসহ, দক্ষ জনবল তৈরিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিনিময় করবে। এছাড়াও যৌথভাবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রজেক্টও পরিচালনার কথা বলা হয়েছে চুক্তিপত্রে।
বিআইএফটি ও এনআইএফটির মধ্যে এ চুক্তি পাঁচ বছর মেয়াদী। প্রতি বছর চারজন করে শিক্ষার্থী ভারত যাবে এবং চারজন শিক্ষার্থী বাংলাদেশে আসবে। এভাবে ৫ বছরে ২০ জন শিক্ষার্থী এ চুক্তির আওতায় সুবিধালাভ করবে। এতে করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে।
এ চুক্তি সাক্ষরের আগে গত ২০ জুলাই এনআইএফটির ফ্যাশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক বিবেকানন্দ ব্যানার্জিসহ আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষক বিআইএফটি পরিদর্শনে আসেন। সে সময় আলোচনার মাধ্যমে তারা এসকল বিষয়ে একমত হন। যার ফলফল হলো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সফরকালীন সময়ে এ চুক্তি স্বাক্ষর। চুক্তিতে বলা আছে, স্বাক্ষর হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১১