মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইবি)-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো পাইরেসি বিরোধী সম্মেলন ২০১১।
৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইনিস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এমপি।
প্রধান অতিথি শামসুল হক টুকু তার বক্তব্যে বলেন, ‘পাইরেসি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেই এ দেশের সংগীত ও চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা সম্ভব। ’
পাইরেসি বন্ধে সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণ, প্রদর্শন এবং চলচ্চিত্রের ভিডিও পাইরেসি রোধে তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উচ্চপর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। বর্তমান সরকার চলচ্চিত্রের অশ্লীলতা, নগ্নতা ও সহিংসতা দূর করতে বদ্ধপরিকর। এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ’
তিনি দাবি করেন, ‘টাস্কফোর্সের কার্যক্রম বৃদ্ধির কারণে এরই মধ্যে ভিডিও পাইরেসি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। অশ্লীল চলচ্চিত্র ও পোস্টার প্রস্তুতের স্থান, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনস্থলে টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সফল অভিযান চালিয়ে অশ্লীল এবং সেন্সরবিহীন ফিল্ম, কাটপিস ও পোস্টার জব্দ করেছে। ’
এমআইবির বর্তমান ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাজমুল হক ভুইয়া তার বক্তব্যে এমআইবির কার্যক্রম তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘২০১০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পাইরেসি সংক্রান্ত অপরাধমূলক কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে এমআইবির পক্ষ থেকে ৪১০টি মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে গ্রেফতারকৃত আসামির সংখ্যা ১১৮০ জন এবং জব্দকৃত পর্নো ও অশ্লীল সিডি-ডিভিডির সংখ্যা ২ লাখ ৬২ হাজার ৯৯৫টি আর পাইরেটেড সিডি-ডিভিডির সংখ্যা ১০ লাখ ৯০ হাজার ২৯১টি। ’
ডিসি অব পুলিশ হেডকোয়ার্টার (ডিএমপি) হাবিবুর রহমান তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে গণসচেতনতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘শুধু পুলিশ প্রশাসন দিয়ে পাইরেসি বন্ধ করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা। কারণ বাজার থেকে আমি বা আপনি না বুঝেই পাইরেটেড সিডি কিনে বাসায় যাচ্ছি, মোবাইলে গান নিয়ে শুনছি। কিন্তু এগুলোও যে পাইরেসির মধ্যে পড়ছে সে ব্যাপারে আমরা সচেতন নই। এই ধরনের বিষয় নিয়ে গণসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম চালাতে হবে। সেই সাথে আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু করা সম্ভব তা আমরা করে যাব। ’
বিশিষ্ট গীতিকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বলেন, ‘এ দেশের পাইরেসির পেছনে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ চক্র, যারা পাইরেসির মাধ্যমে এ দেশের শিল্প-সংস্কৃতি ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে এটি রোধে যা যা করার করে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, প্রশাসন ও সরকার এ ব্যাপারে আন্তরিক ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে এলে পাইরেসি রোধ করা সম্ভব। ’
বক্তব্য শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেন সঙ্গীত তারকা কুমার বিশ্বজিৎ, মেহরিন, বাপ্পা মজুমদার, তপু, কিশোর, মুহিন, জানে আলম ও ডিজুসের ডি রক স্টারখ্যাত শুভসহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১১