জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেছেন, ‘উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে গবেষণামূলক কাজ হচ্ছে; তার মানের ওপর সেই প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি নির্ভর করে। কিন্তু উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের মধ্যে গবেষণার প্রবণতা আশাব্যঞ্জক নয়।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আয়োজিত ৪৯তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে ‘বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। গবেষণার প্রসঙ্গে এসে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় অর্থ বরাদ্দের বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় বাজেটে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেই অর্থ বহুলাংশে ব্যয় হচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে। যে কারণে উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ কম। ’
বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, ‘নিজের ভাগ্যের উন্নয়নের লক্ষে শিক্ষা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষা মনের জানালা খুলে দেয়। আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থায় মেধা ও মননে এবং চিন্তা-চেতনায় অগ্রসর একটি সুশিক্ষিত জাতি নিজেকে এবং দেশকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। ’
প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার ভিত্তি মজবুত হলে উচ্চশিক্ষার মান বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও মূল্যায়নের ব্যবস্থা আছে। বাংলাদেশেও শিক্ষকদের মূল্যায়নের ব্যবস্থা চালু করা উচিত। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য স্বকৃত মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা আবশ্যক বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়ে উপাচার্য বলেন, একটি স্বীকৃতিপ্রদান কমিটি থাকলে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে এবং গবেষণার মান ও পরিমাণ দুই-ই বৃদ্ধি পাবে।
উপাচার্য বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের বিকল্প নেই। এজন্য সরকারকে বিশেষভাবে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। এক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যিক মনোভাব পরিহারপূর্বক শিক্ষা এবং গবেষণাকাজে বিশেষ ভর্তূকি দিতে হবে। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাকে আরো সম্প্রসারিত করতে হলে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ উদ্যোগকে আরো উৎসাহিত করতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১১