সরিষাফুলে বসেছে মৌমাছি। ছবি: বাংলানিউজ
মাদারীপুর: সবুজের মাঠে হলুদের চাদর! প্রকৃতির এই অপরূপ দৃশ্য দেখতে অপেক্ষায় থাকতে হয় শীতকালের জন্য। প্রকৃতিপ্রেমীদের চোখ জুড়াতে জুড়ি নেই সরিষা ফুলের। তবে, এই ফুল যেমন প্রকৃতির সৌন্দর্যকে দেয় ভিন্ন মাত্রা, ঠিক তেমনই একজন কৃষকের স্বপ্ন টকটকে এই হলুদকে ঘিরেই।
ভালো ফলনের প্রত্যাশায় সরিষার আবাদকে ঘিরে থাকে ফসল উৎপাদনকারীদের। আর তাই পরিচর্যার কমতি থাকে না এই রবিশস্য নিয়ে।
শীত মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশাল ফসলের মাঠে দেখা গেছে সরিষার চাষ। মাঠে মাঠে হলুদ ফুলের ছড়াছড়ি। যেন সবুজ প্রান্তরে হলুদের চাদর বিছিয়ে দিয়েছে কোন গ্রাম্য বালিকা!
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় প্রায় ১৪ হাজার ৫শ ৯৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। সাধারণ জাতের সরিষার পাশাপাশি হাইব্রিড নানা জাতের সরিষার আবাদ করা হয় মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থানে। এর মধ্যে রয়েছে বিনা সরিষা ৪ ও ১১, টরি ৭, এসএম ৭৫, বারি সরিষাসহ ৪,৯,১৪ ও ১৫ নানা উন্নত জাত।
কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, রবি শস্যের মধ্যে সরিষার আবাদ অপেক্ষাকৃত সহজ। তাছাড়া সরিষার সঙ্গে একই জমিতে কলাই চাষও করা যায়। তাছাড়া সরিষার আবাদ বেশ লাভজনকও। সরিষা চাষে খরচও কম।
কৃষকেরা জানান, সরিষা চাষে খরচ অন্য সব ফসলের চেয়ে বেশ কম। সরিষা বোনা, সার দেওয়া আর কেটে ঘরে আনা ছাড়া তেমন কোনো কাজ নেই। এক বিঘা জমিতে প্রায় সাত থেকে আট মণ সরিষা হয়। বিঘা প্রতি সরিষা ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা। আর বাজারে বর্তমানে এক মণ সরিষার দাম রয়েছে এক হাজার ছয়শ থেকে এক হাজার সাতশ টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে সরিষার ফলন প্রত্যাশিত হওয়ার আশা করছেন চাষিরা। ![সরিষাফুলের সৌন্দর্য। ছবি: বাংলানিউজ](https://www.banglanews24.com/media/imgAll/2019December/bg/Sorishaful-inner320191230085608.jpg)
জেলার সদর উপজেলা, কালকিনির আড়িয়ালখাঁ নদ সংলগ্ন চরাঞ্চল, শিবচরের বিভিন্ন এলাকা মিলে প্রায় ১৪ হাজার পাঁচশ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে সরিষা।
শিবচরের বহেরাতলা এলাকার যুবক রকিবুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তাদের জমিতে এবার সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। সরিষার সঙ্গে একই জমিতে কলাই চাষও করা হয়েছে। সরিষা চাষে খরচ অন্যান্য ফসলের চেয় কম। তাছাড়া ফলন ভালো হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জিএমএ গফুর বাংলানিউজকে জানান, জেলায় সরিষার আবাদ বরাবরই ভালো হয়। চলতি বছরও ভালো হয়েছে ফলন। আমরা আশাবাদী রেকর্ড পরিমান ফলন পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯
এএটি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।