চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, শারীরিক সুস্থ্যতার জন্য পরিমিত ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস খুবই জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস বলতে- যে সব খাদ্য নিয়মিত ও পরিমিত মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ্য থাকে এমন অভ্যাস গড়ে তোলা।
তবে গড়পরতায় নিয়মিত খাদ্য তালিকায় প্রচুর শাকসবজি, পানীয় বা মিনারেল, মাছ, মাংস, খনিজ লবণ ও স্নেহজাতীয় পদার্থ থাকা আবশ্যক। খাদ্যে অরুচি বা অনাগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে একই ধরনের এমন খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় না থাকাই ভালো। এজন্য মাঝে মাঝে নিয়ম করে পরিবর্তন করা উচিত খাদ্য তালিকায়।
অন্যদিকে, প্রতিদিনের খাবার তালিকায় তৈলাক্ত বা ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার রাখলে মারাত্মক অসুস্থ্য হওয়ার আশংকা থাকে। সচরাচর তাই এ জাতীয় খাবার গ্রহণ না করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তারপরও মুখরোচক আর মচমচে স্বাদের তৈলাক্ত এবং ভাজাপোড়া জাতীয় খাবারের প্রতি মানুষের অসক্তি পৃথিবীব্যপী!
মচমচে, তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবরের প্রতি কোন কোন মানুষের অসক্তি রীতিমত পাগলামির পর্যায়েও পৌঁছায়। এ ধরনের একটি কঠিন নমুনা হতে পারে ইংল্যাণ্ডের বার্মিংহামের তরুণী স্ট্যাসি ইরভাইন। গত ১৫ বছর ধরে সে শুধুমাত্র চিকেন নাগেটস খেয়ে বেঁচে আছে! চিকেন নাগেটস এর সাথে তার সম্পর্ক ২ বছর বয়েসেই!
ডুবো তেলে ভাজা, খেতে স্বুসাদু চিকেন নাগেটস অনেকেরই প্রিয়। কিন্তু তাই বলে সব খাবার ছেড়ে টানা ১৫ বছর শুধুমাত্র চিকেন নাগেট খাওয়া! একই ধরনের খাবার পরপর কয়েকদিন খেলে যে অরুচি ভাব ধরার কথা তা টানা পনের বছরেও ঘটেনি স্ট্যাসির! দীর্ঘ ১৫ বছরে চিকেন নাগেটস এর বাইরে স্ট্যাসি কদাচিৎ সকালের নাস্তায় খেয়েছে শুধুমাত্র ফ্রাইড টোস্ট এবং ক্রিসপ।
চিকেন নাগেটস ভক্ত স্ট্যাসি বলেন- ‘আমার বয়স যখন মাত্র ২ বছর তখন মা একদিন আমাকে ম্যাকডোনাল্ডস এ নিয়ে যায়। সেখানে সর্বপ্রথম আমি চিকেন নাগেটস নামের বস্তুটির স্বাদ গ্রহণ করি। পরে আমি সেটির প্রেমে পরে যাই।
তারপর থেকে অন্য কোনো খাবার খেতে কখনো চেষ্টাও করিনি। এমন কি এক বছর আগে পর্যন্ত আমার মা-ও আমাকে অন্য কিছু তেমনভাবে অফার করেননি। ’
তার মা ইভোন্নি বলেন- ‘স্ট্যাসি এটার প্রতি খুবই আসক্ত হয়ে পড়েছিল। চিকেন নাগেটস থেকে বিরত রাখতে এমন কি তাকে না খাইয়ে রেখেও চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। অন্য কোনো খাবার সে মুখেও তোলেনি!’
তবে; টানা ১৫ বছর তেলে ভাজা চিকেন নাগেটস খাওয়ার চরম ক্ষেসারতও দিতে হয়েছে একগুঁয়ে স্ট্যাসিকে।
মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে যাওয়ায় ১৭ বছর বয়েসি স্ট্যাসিকে ভর্তি হতে হয়েছে হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা- পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিনের অভাব, জিহ্বার শিরা-উপশিরা প্রশস্ত হয়ে যাওয়া এবং মারাত্মক রক্ত স্বল্পতাকে তার অসুস্থ্যতার কারণ বলে উল্লেখ করেন।
চিকিৎসকরা জানান- দীর্ঘদিন সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল জাতীয় খাবার গ্রহণ না করায় ট্যাসি অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে থাকায় শিক্ষাও হয়েছে স্ট্যাসির। সে বলেছে- আমি এখন বুঝতে পারছি, ১৫ বছর ধরে তেলে ভাজা খাবার খাওয়ায় আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে!
এখন বাড়িতে সাধারণ খাদ্যাভাস গড়ে তুলে ভগ্ন স্বাস্থ্য ফিরে পাবার চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্ট্যাসি!
বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, ২৮ জানুয়ারি, ২০১২