ঢাকা: ইনার ভ্যালেন্সিয়ার জোড়া গোলে হন্ডুরাসের বিপক্ষে ২-১ এ জয় তুলে নিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে ওঠার আশা জিইয়ে রাখলো ইকুয়েডর। প্রথমে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে জয় তুলে নিল লাতিন আমেরিকার দেশটি।
বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে কুরিতিবার অ্যারেনা দে বাইক্সাদা স্টেডিয়ামে হন্ডুরাসের বিপক্ষে জয়লাভ করা ইকুয়েডরের পরবর্তী রাউন্ডে ওঠা নির্ধারিত হবে ২৫ জুন গ্রুপের চারটি দলের অপর দু’টি ম্যাচের ওপর।
দু’দলের এ বাঁচা-মারার লড়াইয়ের প্রথম মিনিটেই দলের পক্ষে প্রথম ফ্রি কিক করেন ইকুয়েডরের ইনার ভ্যালেন্সিয়া।
ছয় মিনিটের মাথায় হন্ডুরাসের অস্কার গার্সিয়া গোলপোস্ট লক্ষ্য করে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেন। তবে সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
সাত মিনিটের মাথায় অসংযত আচরণের দায়ে হলুদ কার্ড হজম করেন হন্ডুরাসের ভিক্টর বার্নান্দেজ।
আট মিনিটের মাথায় ইকুয়েডরের ওয়াল্টার অ্যায়োবির বাম পায়ের শট প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে গেলেও তা ভ্রষ্ট হয়।
১৮ মিনিটের মাথায় পুরো গোলপোস্টে কেবল গোলরক্ষককে পেয়েও গোল করতে পারেননি ইনার ভ্যালেন্সিয়া।
২০ মিনিটের মাথায় ম্যাচের প্রথম কর্নার কিক করেন হন্ডুরাসের বার্নান্দেজ।
খেলার ২৭ মিনিটের মাথায় জুয়ান প্যারেডসের করা কর্নার থেকে হেড নেন বার্নান্দেজ। তবে সেই হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
এরপর বেশ ক’বার আক্রমণ চালিয়েও ফলশূন্য থাকতে হয় দু’দলকে। তবে শেষ পর্যন্ত ৩১ মিনিটের মাথায় ম্যাচে প্রথম আঘাত হানেন হন্ডুরাসের কোস্টলি। হন্ডুরাসের এ স্ট্রাইকার ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাম পায়ের দুর্দান্ত শটে বল জালে জড়িয়ে গোল উৎসবে মেতে ওঠেন।
তবে, হন্ডুরাসের প্রথম গোল উদযাপনের রেশ না কাটতেই পাল্টা আঘাত হানেন ইকুয়েডরের ইনার ভ্যালেন্সিয়া। প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের ছয় গজ দূর থেকে বাম পায়ের শটে বল জালে জড়ান তিনি।
এরপর দু’দলই আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে কয়েকবার আক্রমণ চালানোর পর অতিরিক্ত সময়ে দ্বিতীয় গোল উদযাপন করতে থাকেন হন্ডুরাসের জেরি বেংস্টন। তবে তিনি অফসাইড থাকায় রেফারি গোল নাকচ করে দেন। এনিয়ে বিতর্কে জড়ালে তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমণ করে বসে হন্ডুরাস। ডি-বক্সের বাইরে থেকে ব্রায়ান বেকলেসের নেওয়া ডান পায়ের জোরালো শট দক্ষতার সঙ্গে ফিরিয়ে দেন ইকুয়েডরের গোলরক্ষক।
৪৭ মিনিটের মাথায় পাল্টা আক্রমণে যায় ইকুয়েডর। তবে, দলের খেলোয়াড় অসালো মিন্দা যখন বল নিয়ে প্রায় ডি-বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়ছিলেন তখনই অফসাইডে ধরা পড়েন ইনার ভ্যালেন্সিয়া।
এরপর বেশ কয়েকটি ফাউল হয় এবং দু’টি দলই একাধিক কর্নার ও ফ্রি কিক পায়।
অবশ্য, ৬৫ মিনিটের মাথায় ভুল করেননি ভ্যালেন্সিয়া। ওয়াল্টার অ্যায়োবির পাস থেকে পাওয়া বল দুর্দান্ত হেডে হন্ডুরাসের জালে জড়ান তিনি। আর তাতে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ইকুয়েডর।
ইকুয়েডরের এ গোলের পর হন্ডুরাসের পক্ষ থেকে বেশ ক’বার আক্রমণ চালানো হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত বেশ দক্ষতার সঙ্গেই সেগুলো ফিরিয়ে দেয় ইকুয়েডরের ডিফেন্স।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল ইকুয়েডর, আর ফ্রান্সের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরেছিল দুর্বল হন্ডুরাস।
‘ই’ গ্রুপের দুই দলই প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ায় পরবর্তী রাউন্ডে ওঠার লড়াইয়ে টিকে থাকতে এ ম্যাচে জয়লাভে মরিয়া ছিল।
এ ম্যাচে হেরে যাওয়ায় হন্ডুরাসের পরবর্তী রাউন্ডে ওঠাটা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে গেলো। দলটির পরবর্তী রাউন্ডে ওঠার ক্ষীণ আশাও নির্ভর করছে ২৫ জুন সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ওপর। ওই ম্যাচে যদি তারা জয়লাভ করে তবে অনেক সমীকরণ আর হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার কথা ভাবতে হবে। আর হারলে তো বিদায়ই!
দুই দলের বাঁচা মরার লড়াইয়ে দলের জয়ের জন্য ইকুয়েডরের পক্ষে মাঠে ছিলেন-ডোমিনগুয়েজ, গুয়াগুয়া, এরাজো, প্যারেডেস, নোবোয়া, জেফারসন মোন্তেরো, অ্যাইয়াওবি, ফিলিপে কাইসেদো, ই. ভ্যালেন্সিয়া, মিন্দা ও আন্তোনিও ভ্যালেন্সিয়া (অধিনায়ক)।
দলটির কোচের দায়িত্বে রয়েছেন রেইনালদো রুয়াদা।
অপরদিকে হন্ডুরাসের পক্ষে মাঠে ছিলেনন-নোয়েল ভায়াদারেস (অধিনায়ক), মাইনর ফিগেরোয়া, ভিক্তোর বের্নান্দেজ, এমিলিও ইসাগিরে, জেরি বেংটসন, কার্লো কোস্টলি, অস্কার গার্সিয়া, রজার এসপিনোসা, গারিদো, হোর্হে ক্লারোস ও বেকলেস।
দলটি খেলেছে কোচ লুই ফের্নান্দো সুয়ারেজের তত্ত্বাবধানে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৭ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৪