ঢাকা: ডি মারিয়ার একমাত্র গোলে কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। অতিরিক্ত সময়ের ১১৮ মিনিটে ডি মারিয়ার গোল আর্জেন্টিনার শিবিরে স্বস্তি নিয়ে আসে।
তবে ১২১ মিনিটে গোলটি প্রায় পরিশোধ করে ফেলেছিলেন সুইজারল্যান্ডের ফরোয়ার্ড জেমিলি। জেরদান শাকিরির ফ্রিকিকের বলে হেড করলে বলটি আর্জেন্টিনার বামপাশের গোলবারে লেগে ফিরে আসে। আর তখনই বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে মাঠভর্তি আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা।
এর আগে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কোনো দলই গোল করতে না পারায় অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ায়। অতিরিক্ত সময়ের ১১৮ মিনিটে মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করেন ডি মারিয়া।
গোলশূন্য নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু সঙ্গে সঙ্গেই গোল করার সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের ৯২ মিনিটে ডি মারিয়া কর্নার কিক করে বল পাঠান সুইজারল্যান্ডের ডিবক্সে, সেখানে উপস্থিত ফারনান্দেজ ও গ্যারেকে বোকা বানিয়ে বলটি ক্লিয়ার করেন গোলরক্ষক বেনাগলিও।
সুইজারল্যান্ডের গোলমুখ খুলতে পারেননি মেসি-ডি মারিয়ারা। আর এ কারণে আর্জেন্টিনা-সুইজারল্যান্ড ম্যাচও অতিরিক্ত সময়ে গড়িয়েছে।
প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গুছিয়ে আক্রমণ করতে থাকে আর্জেন্টিনা। খেলার ৪৭ মিনিটে বাম পাশ দিয়ে সুইজারল্যান্ড ডিফেন্ডারদের পার করে ডিবক্সের ভেতরে বল পাঠান লাভেজ্জি। কিন্তু গনজালো হিগুয়েনের আগেই বলটি ক্লিয়ার করেন সুইস ডিফেন্ডার জরু।
অন্যদিকে ম্যাচের ৫১ মিনিটে জেরদান শাকিরি ফ্রিকিক থেয়ে কার্লিং শটে বল পাঠান আর্জেন্টিনার গোলবারের ডান পাশে। বলটি ক্লিয়ার করতে রোমেরোকে বেড় পেতে হয়।
ম্যাচের ৫৭ মিনিটে গোল করার সুযোগ পান আর্জেন্টিনার লেফ্টব্যাক মার্কোস রোহো। লাভেজ্জির বাড়িয়ে দেওয়া বল বাম পায়ে শট নেন রোহো। কিন্তু তার শট সুইস গোলরক্ষক বেনাগলিও পাঞ্চ করে ক্লিয়ার করেন।
এরপর আবারও সুইস গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় গোলবঞ্চিত হয় আর্জেন্টিনা। খেলার ৬২ মিনিটে মার্কোস রোহোর ক্রসে জোরালো হেড করেন হিগুয়েন। কিন্তু ঠিক জায়গায় দাঁড়ানো গোলরক্ষ বেনাগলিও লাফিয়ে উঠে পাঞ্চ করে হিগুয়েনকে তার প্রথম গোল থেকে বঞ্চিত করেন।
এরপর লিওনেল মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে সুইজারল্যান্ডের গোলবার মুখে শট করেন লাভেজ্জি। কিন্তু তার শট ব্লক করে দেন সুইস ডিফেন্ডার।
ম্যাচের ৬৬ মিনিটে প্রথম বদলি খেলোয়াড় নামান সুইজারল্যান্ডের কোচ ওতমার হিজফেল্ড। গ্রানিট জাকার পরিবর্তে মাঠে নামেন মিডফিল্ডার গেলসন ফারনান্দেস।
এরপর ম্যাচের ৬৯ মিনিটে লিওনেল মেসি তার প্রথম শট করেন গোলবার মুখে। বুক দিয়ে রিসিভ করে বাম পায়ে নেওয়া মেসির শট অল্পের জন্য গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়।
৭৩ মিনিটে লিওনেল মেসিকে পেছন থেকে অবৈধভাবে বাধা দেওয়া ম্যাচের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন সুইজারল্যান্ডের মিডফিল্ডার গেলসন ফারনান্দেস।
৭৪ মিনিটে আর্জেন্টিনার প্রথম বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন রদ্রিগো প্যালসিও। এজেকুয়েল লাভেজ্জির বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন তিনি।
৭৫ মিনিটে মেসির ডেলিভারি থেকে ডিবক্সের ভেতরে পাওয়া বলে হেড করেন প্যালসিও। কিন্তু তার হেড গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যায়।
৭৮ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের খেলোয়াড় বেহরামিকে কাটিয়ে জোরালো শট নেন মেসি। কিন্তু তার জোরালো শট ফিরিয়ে দেন সুইস গোলরক্ষক বেনাগলিও।
৮৭ মিনিটে অপ্রত্যাশিতভাবে সুইস তারকা বেহরামিকে অবৈধভাবে ধাক্কা দেন মেসি। পরে রেফারি মেসিকে কার্ড না দেখালেও সতর্ক করে দেন।
এর আগে প্রথমার্ধে বিবর্ণ দেখা গেছে আর্জেন্টিনাকে, খেলায় বল পজেশনে আর্জেন্টিনা এগিয়ে থাকলেও গোল করার সুযোগ বেশি তৈরি করে সুইজারল্যান্ড। প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্যভাবে শেষ হয়েছে ম্যাচটি।
ম্যাচে প্রত্যাশিতভাবেই প্রথম থেকে বল পজেশন ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষের গোলবার মুখে ম্যাচের প্রথম শটটি করেন আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার ফারনান্দো গ্যাগো, তবে তার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
অন্যদিকে ম্যাচের ৯ মিনিটে ৩০ গজ দূর থেকে সুইজারল্যান্ডের মিডফিল্ডার গোখান ইনলারের নেওয়া ইনলারের শট আর্জেন্টিনার গোলবারের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়।
খেলার ১২ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের ডিবক্সের ভেতরে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন লিওনেল মেসি। মেসির নেওয়া বাম পায়ের শট সুইস গোলরক্ষক দিয়েগো বেনাগলিও বাম দিকে ঝাপিয়ে পড়ে তালুবন্দী করেন।
ম্যাচের ২৮ মিনিটে গ্রানিট জাকার ডান পায়ের জোরালো শট আটকে দিয়ে সুইজারল্যান্ডকে গোলবঞ্চিত করেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো। এরপর ফিরতি বলে আবারও বা পায়ে জোরালো শট নেন সুইস মিডফিল্ডার গোখান ইনলার। তার শটও আটকে দেন গোলরক্ষ রোমেরো।
এরপর পাল্টা আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা, গনজালো হিগুয়েনের কাছ থেকে ডিবক্সের ভেতরে বল পেয়ে আলতো শট করেন লাভেজ্জি। কিন্তু তার শটে জোর না থাকায় সুইস গোলরক্ষক বেনাগলিওকে বল তালুবন্দী করতে কোনো বেগ পেতে হয়নি।
ম্যাচের ৩৬ মিনিটে এজেকুয়েল লাভেজ্জিকে ফাউল করায় রেফারি ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখান সুইস মিডফিল্ডার গ্রানিট জাকাকে।
ম্যাচের ৩৯ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের ফরোয়ার্ড জেসেপ দ্রিমিক গোল করার সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। ডিবক্সের ভেতরে গোলরক্ষককে একা পেয়েও দুর্বল শটে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক রোমেরোর হাতে বল তুলে দেন দ্রিমিক।
এরপর পাল্টা আক্রমণে মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াও দুর্বল শটে গোল করার সুযোগ নষ্ট করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৪