বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে চেন্নাইয়ের মুখোমুখি হয়েছিল বসুন্ধরা। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকা কিংসরা এগিয়ে যায় ষষ্ঠ মিনিটে।
ম্যাচে সব ছাপিয়ে আলোচনার খোরাক জুগিয়েছে মাঠ ও মাঠের বাইরের বাক-বিতণ্ডা। ঘটনার সূত্রপাত ২২তম একটি ফ্রি-কিককে কেন্দ্র করে। তখন পর্যন্ত এক গোলে এগিয়ে বসুন্ধরা। সেট পিস থেকে শট নেওয়ার সময় একটু আগ্রাসী মনোভাব প্রকাশ করেন চেন্নাইয়ের জাপানি মিডফিল্ডার কাৎসুমি ইয়োসা। ম্যাচ রেফারি শ্রীলঙ্কার লাকমল ভিরেক্কোদ্দি সাবধান করে দিয়ে ইয়োসাকে বলেন, ‘হেই চায়নাম্যান দিজ ইজ নট চীন, ইটস বাংলাদেশ (এই চায়নাম্যান এটা চীন নয়, বাংলাদেশ)। বিষয়টা ইগোতে লাগে ইয়োসার।
এ সময় বসুন্ধরা কিংস কোচ অস্কার ব্রুজনের দিকে বল হাতে ছুটে যান ইয়োসা। তিনি রাগী ভঙ্গিমায় ব্রুজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তবে দু’জনের কথা চলাকালে ইয়োসা খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে মাঠ থেকে ওঠে যান। লাথি মারেন খেলোয়াড়দের বসার জন্য দেওয়া চেয়ারে। ব্রুজন ও ইয়োসাকে ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করেন টুর্নামেন্ট কর্মকর্তারা। এর দুই মিনিট পরেই রেফারির দিকে হাত পাকিয়ে মারার জন্য তেড়ে যান কাৎসুমি। বাকি খেলোয়াড়রা অবশ্য রক্ষা করেন রেফারিকে।
এমন সময় চেন্নাইয়ের অন্যান্য খেলোয়াড়রাও না খেলার জন্য মাঠের বাইরে চলে আসেন। যার ফলে ম্যাচ বন্ধ থাকে ১১ মিনিট। রেফারি ৩২ মিনিটে লাল কার্ড দেখান ইয়োসাকে। আরো তিন মিনিট আলোচনার পর ৩৫ মিনিটের মাথায় ম্যাচ পুনরায় শুরু হয়। তবে ঘটনা এখানে শেষ হয়নি। ১০ জনের দল নিয়ে মাঠের মধ্যে ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ ফুটবল খেলতে থাকে চেন্নাই। ৪২ মিনিটে মাশুরের ক্রস থেকে চেন্নাইকে সমতায় ফেরান অধিনায়ক পেদ্রো হাভিয়ের ক্রুজ।
উত্তেজনা-বিতর্ক-নাটকীয়তা এখানেই শেষ নয়। ম্যাচ ১১ মিনিট বন্ধ থাকায় প্রথমার্ধেই ১২ মিনিট বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যোগ করা সময়ে কিংসের কিরগিজস্তানের মিডফিল্ডার বখতিয়ারকে ফাউল করেন চেন্নাইয়ের এক খেলোয়াড়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মাঠে ঢুকে পড়েন বসুন্ধরা কিংস কোচ অস্কার ব্রুজন। শিষ্যের আঘাত পাওয়ার ক্ষোভে তিনি বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন রেফারি ও চেন্নাই কোচ মোহাম্মদ আকবরের সঙ্গে। ম্যাচ রেফারি বিষয়টি সমাধান করেন দুই কোচকে লাল কার্ড দেখিয়ে।
বিরতির পর নাটক জমেছিল আরো। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকা বসুন্ধরা পুনরায় এগিয়ে যায় ৫৮ মিনিটে। কলিন্দ্রেসের ক্রস থেকে ব্যবধানটা ২-১ করেন বখতিয়ার। ৬৯ মিনিটে ৯ জনের দল হয়ে পড়ে কিংসরা। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার রবার্তো সুয়ারেজ। এর পরের মিনিটে গোল শোধ করে চেন্নাই। বল সেভ করতে এগিয়ে গিয়েছিলেন বসুন্ধরা গোলরক্ষকক আনিসুর রহমান জিকু। কিন্তু তার মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন মাশুর।
গোল হজমের পর একের পর এক আক্রমণ চালায় বসুন্ধরা। কিন্তু গত ম্যাচের মতো এবারও ফিনিশারের অভাবে গোল পাচ্ছিল না তারা। ৮৭ মিনিটে স্বস্তির গোল পায় ব্রুজনের দল। রবিউলের ক্রস থেকে বসুন্ধরাকে জয়সূচক গোল এনে দেন জালাল। বাকি সময় ব্যবধান ধরে রেখে সেমির আশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে বসুন্ধরা কিংস।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৯
ইউবি/এমএইচএম