একদিন আগেও ম্যাচটি আয়োজন নিয়েই ছিল সংশয়। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী জনগণ আর্জেন্টিনা-উরুগুয়ের ম্যাচটি ইসরায়েলে না খেলার জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার ছিল।
কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ না জানালেও অনেকটা গোপনে ইসরায়েলে পৌঁছেছিল আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে দল। বার্সেলোনা সতীর্থ লুইস সুয়ারেসের উরুগুয়ের বিপক্ষে মুখোমুখি হওয়ার জন্য মেসি ও তার দল তেল আবিবের কাছে বেন গুরিয়ন এয়ারপোর্টে এক ফ্লাইট থেকে নেমে ক্যামরাম্যান ও সাংবাদিকদের এড়িয়ে সরাসরি এক বাসে ওঠে যায়। এরপর তাদের দেখা মেলে ম্যাচের ঠিক আগে।
তেল আবিবের নিউ ব্লুমফিল্ড স্টেডিয়ামে সোমবার (১৯ নভেম্বর) দিনগত রাতে উরুগুয়ের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের একাদশে মেসি ও পাওলো দিবালার সঙ্গে আক্রমণভাগে সার্জিও আগুয়েরোকে নামান আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। তবে শুক্রবার ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়ের আনন্দ নিয়ে মাঠে নামলেও শুরুটা মোটেই মনের মতো হয়নি মেসিদের।
শুরু থেকে উরুগুয়ের জমাট ও গোছানো রক্ষণে স্পষ্ট কোনো আক্রমণেই যেতে পারেনি আলবিসেলেস্তেরা। উল্টো ব্রাজিলের বিপক্ষে দারুণ পারফর্ম করা দলটি রক্ষণের ভুলে গোল হজম করে। আর সেই গোলে বড় ভূমিকা রাখেন মেসির ক্লাব সতীর্থ লুইস সুয়ারেস। ডান দিক থেকে এই বার্সা স্ট্রাইকারের বাড়ানো পাসে পা বাড়িয়ে তেল আবিবে উরুগুয়েকে এগিয়ে দেন পিএসজি ফরোয়ার্ড এদিনসন কাভানি।
গোল শোধ করতে মরিয়া আর্জেন্টিনা অবশ্য সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল খেলার ৩৮তম মিনিটে। কিন্তু দু’বারের চেষ্টায় বল জালে জড়ালেও হ্যান্ডবলের কারণে দিবালার প্রচেষ্টা বিফলে যায়। এরপর ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া মেসির ফ্রি-কিক বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন উরুগুইয়ান গোলরক্ষক মার্তিন কাম্পানা।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ভিন্নরূপে দেখা দেয় আর্জেন্টিনা। বেশ কিছু আক্রমণ প্রতিপক্ষের রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখাও পেয়ে যায় দলটি। দলকে সমতায় ফেরানো গোলটি করেন দীর্ঘদিন পর আর্জেন্টিনার জার্সিতে ফেরা আগুয়েরো। তবে এই গোলের পেছনে মেসির অবদান কোনো অংশে কম নয়। ডি-বক্সের বাঁ প্রান্তের সামনে থেকে বার্সা অধিনায়কের বাঁকানো ও মাপা ফ্রি-কিক থেকে উড়ে আসা বলে পোস্টের একদম সামনে থাকা আগুয়েরো শুধু মাথা ছোঁয়ান।
মেসিদের এগিয়ে যাওয়ার স্বস্তি অবশ্য দীর্ঘায়িত হয়নি। আর প্রিয় বন্ধুর দলকে অস্বস্তি উপহার দেওয়া গোলটি করেন সদ্যই ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা সুয়ারেস। ৭২তম মিনিটের গোলটি আসে ফ্রি-কিক থেকে। ডি-বক্সের বাঁ প্রান্তের ঠিক সামনে থেকে নেওয়া উরুগুইয়ান তারকার বুলেট গতির শট ঠেকানোর কোনো উপায় ছিল না আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এস্তেবান আন্দ্রাদার।
ম্যাচের ফলাফল যখন উরুগুয়ের পক্ষেই যাচ্ছে বলে সবাই ধরেই নিয়েছে ঠিক সেসময় আর্জেন্টিনাকে বাঁচিয়ে দেওয়া গোলটি আসে মেসির পা থেকে। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে মেসির নেওয়া পেনাল্টি কিক সহজেই পরাস্ত করে কাম্পানাকে। আর সমতা নিয়ে মাঠে ছাড়ে দুই দল। এই নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অনুষ্ঠিত দুই ম্যাচেই মেসি জাদু ম্যাচের ফল নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ালো।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
এমএইচএম/এইচএডি/