নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে শাসনক্ষমতা দখল করায় সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে চলছে তীব্র আন্দোলন। প্রতিদিনই দুই পক্ষের সংঘর্ষে বহু মানুষ হতাহত হচ্ছে।
বাছাইপর্বে খেলতে গত মাসের শেষ দিকে জাপানে এসেছিল মিয়ানমারের জাতীয় ফুটবল দল। গত ২৮ মে তারা স্বাগতিকদের কাছে তারা ১০ গোল খেয়ে হারে। তবে ওই ম্যাচেই এক দুঃসাহসী কাণ্ড করে বসেন দলের অতিরিক্ত গোলরক্ষক ২৭ বছর বয়সী পায়ে লিয়ান আউং।
বাছাইপর্বের ম্যাচ শুরুর আগে যখন জাতীয় সঙ্গীত বাজছিল, তখন লিয়ান আউং ডান হাতের তিনটি আঙুল ওপরে তুলে ধরেন। আঙুলগুলোতে লেখা ছিল সামরিক জান্তা বিরোধী বার্তা। এছাড়া তার বাহুতে ইংরেজিতে লেখা ছিল, 'আমরা বিচার চাই'।
জাপানের বিপক্ষে ম্যাচের পরও মিয়ানমারের জাতীয় দল ১৫ জুন তাজিকিস্তানের বিপক্ষে বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য জাপানে থেকে যায়। এই সময়টুকুতে লিয়ান আউংকে মিয়ানমার দলের অনুশীলন ক্যাম্পে পুরোপুরি নজরবন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারের জাতীয় দল গত বুধবার রাতে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশের উদ্দেশে যাত্রা করে। লিয়ান আউং ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন, দেশে ফিরলে তার ভাগ্যে কী হতে পারে। তাই তিনি দলের সঙ্গে বিমানবন্দরে এসে জাপানি কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন এবং প্লেনে উঠতে অস্বীকৃতি জানান।
জাপানি কর্তৃপক্ষের কাছে লিয়ান আউং বলেন, দেশে ফিরলে তাকে মরতে হতে পারে। বিমানবন্দরের অভিবাসন কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পায়ে লিয়ান আউংকে বিমানবন্দরে অবস্থানের অনুমতি দেন।
দ্রুতই এই খবর ছড়িয়ে পড়ে মিডিয়ায়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও গুরুত্ব দিয়ে খবরটি ছাপে। পরদিন সকালে বিমানবন্দরে হাজির হয় সাংবাদিকদের দল। লিয়ান আউং তাদের বলেন, দেশে ফিরে গেলে জীবন বিপন্ন হতে পারে। তাই তিনি জাপানে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জাপানের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, লিয়ান আউংয়ের প্রতি ইতোমধ্যেই জাপানি জনগণ সহানুভূতি প্রদর্শন করছে। সুতরাং অল্প সময়ের মধ্যেই হয়তো লিয়ান আউং জাপানে শরণার্থীর মর্যাদা পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২১
এমএইচএম