ফিলিপ্পে কুতিনহোকে নিয়ে বেশ ঝামেলাতেই পড়েছে বার্সেলোনা। কোনো ক্লাবই এই ব্রাজিলিয়ান প্লে-মেকারকে নিতে চায় না।
ইনজুরি থেকে সেরে ওঠতে ব্রাজিলের নিজ বাড়িতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কুতিনহো। গত ৩০ ডিসেম্বর ইনজুরিতে পড়েন তিনি এবং এরপর থেকে ক্লাবের চিকিৎসক দল যেমনটা প্রত্যাশা করেছিল, তার চেয়ে বেশি সময় সাইডলাইনে ছিলেন তিনি।
বার্সার ইতিহাসে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় কুতিনহো হয়তো আরও এক মৌসুম ক্যাম্প ন্যুয়েই থেকে যাবেন। কারণ অন্য কোনো ক্লাব তাকে পেতে কোনো প্রস্তাব দিচ্ছে না। এমনকি ধারেও না। অথচ দুই মৌসুম আগে বায়ার্নে ধারে গিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতে এসেছেন তিনি।
গত ডিসেম্বরে এইবারের বিপক্ষে ম্যাচে হাঁটুতে চোট পান কুতিনহো। পরে নতুন বছরের শুরুতে ব্রাজিলে তার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করানো হয়। কয়েক মাস পর, দীর্ঘ পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষেও যখন কোনো উন্নতি হলো না, তখন তাকে সেরে ওঠার সুযোগ দিতে কাতারে পাঠানো হয়। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
মাসখানেক আগে ব্রাজিলে ফিরে কোপা আমেরিকায় খেলার স্বপ্ন নিয়ে দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করান কুতিনহো। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যদিও গত মৌসুমে বার্সার জার্সিতে মাত্র ১২টি ম্যাচ খেলে অল্প কিছু গোলও করেছিলেন কুতিনহো। কিন্তু তার বর্তমান পরিস্থিতির কারণে তার ক্যারিয়ার এখন হুমকির মুখে।
স্পেনের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বার্সার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি মেনেই নিয়েছেন যে, এবারের দলবদলের বাজারে কুতিনহোর জন্য কোনো প্রস্তাব তারা পাবে না। তার মানে আগামী মৌসুমে কাতালুনিয়ার জায়ান্টদের ঘরেই থাকছেন তিনি। যদিও আর্সেনাল এবং এভারটন তাকে নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছ বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব পায়নি বার্সা।
তবে কুতিনহোকে ‘বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো’ বার্সার জন্য বেশ কঠিন। এমনিতেই করোনা মহামারির কারণে তাদের আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ। তার ওপর তিনি আবার বার্সার সবচেয়ে বেশি বেতনের খেলোয়াড়দের একজন। কুতিনহোক নিজেও কম বেতনে অন্য কোনো ক্লাবে যেতে রাজি নন। বরং তার জন্য বার্সাকে আগামীতে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতে হবে।
২০১৯ সালে কুতিনহোকে ধারে নিয়েছিল বায়ার্ন। ওই সময় তার বেতন-ভাতা পরিশোধের পাশাপাশি বার্সাকে সাড়ে ৮ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছিল জার্মান জায়ান্টরা। কিন্তু ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে এখন যে আর্থিক স্থিতি তাতে অত অর্থ খরচ করে ধারে কেউ তাকে নেবে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। এমনকি ইংলিশ ফুটবল, যেখানে তার বেশ মূল্যায়ন হওয়ার কথা, সেখান থেকেও কোনো ইতিবাচক সাড়া আসছে না।
গত মৌসুমের শুরুর দিকে বার্সার কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় রোনাল্ড কোম্যান বেশ ঘটা করেই কুতিনহোকে নিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন। এই ডাচ কোচ ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারকে আরও সুযোগ দেওয়ার পক্ষেই ছিলেন। মৌসুমের প্রথম কয়েক ম্যাচ তাকে সুযোগও দিয়েছিলেন। কিন্তু বড়দিনের পর থেকে ধারাবাহিক ইনজুরি তার উঠতি ফর্ম পড়তির দিকে নিয়ে যায়। পরে তো দৃশ্যপট থেকেই হারিয়ে যেতে শুরু করেন তিনি। আর এখন বার্সার কাঁধে বাড়তি বোঝার মতো হয়ে আছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২১
এমএইচএম