ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

জরায়ুমুখের ক্যান্সার ও ভায়া পরীক্ষা

সাদিয়া ফাতেমা কবীর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১২
জরায়ুমুখের ক্যান্সার ও ভায়া পরীক্ষা

ঢাকা: জরায়ুমুখে ক্যান্সার নারীদের শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে অন্যতম আকার ধারণ করেছে। সাধারণত বিবাহিত এবং ৩০ বছরের বেশি বয়সের নারীরা এ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।



তবে আশার কথা হলো নিয়মিত পরীক্ষা এবং সঠিক সময়ে জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্ণয় করা গেলে, এটিকে সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায়।

জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্ণয়ের পদ্ধতি: ভায়া (Visual Inspection with Acetic acid বা VIA) টেস্ট বা ভায়া পরীক্ষা জরায়ু মুখের ক্যান্সার নির্ণয়ের একটি সাধারণ পদ্ধতি। জরায়ু মুখের ক্যান্সার নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অন্যান্য পরীক্ষাগুলোর মধ্যে ভায়া পরীক্ষা উল্লেখ্যযোগ্য। কারণ এই পরীক্ষাটি দেশের সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্রসহ নগরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হচ্ছে।

যারা আক্রান্ত হচ্ছেন: জরায়ু মুখের ক্যান্সারে সাধারণত বিবাহিত নারীরা আক্রান্ত হয়। এছাড়া আমাদের দেশের আবহাওয়া, কম বয়সে বিয়ে এবং সব দিকে বিবেচনায় ৩০ বছরের পর থেকে জরায়ুমুকে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই বছরে একবার করে করা ভায়া টেস্ট করানো উচিত।

জরায়ুমুখ ক্যান্সার নিরাময় যোগ্য: আমাদের দেশে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ছয়হাজার নারী জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু একটু সচেতন হলেই এ ক্যান্সার নিরাময় করা সম্ভব। সঠিক সময়ে নির্ণয় করা গেলে জরায়ুমুখের ক্যান্সার পুরোপুরি নিরাময় করা যায়।

কেন মৃত্যু হার বেশি: দারিদ্র্য, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অভাব, সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় এবং অসচেতনতাই এই ক্যান্সারে মৃত্যুর হার বেশি।

ভায়া পরীক্ষায় করণীয়: ভায়া পরীক্ষা করার জন্য খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয়না। এই পরীক্ষাটি যেকোনো সময়েই করানো যেতে পারে। এমনকি মাসিক চলাকালীন স্রাবের পরিমাণ কম থাকে তবে সে সময়েও করানো সম্ভব ভায়া পরীক্ষা।

এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে জরায়ুমুখে এসিটিক এসিড প্রয়োগ করা হয় এবং লক্ষ্য করা হয় যে জরায়ুমুখের স্বাভাবিক বর্ণের কোনো পরিবর্তন হয় কিনা। যদি আপনার জরায়ুমুখটি সুস্থ থাকে তবে সেটির স্বাভাবিক বর্ণ অপরিবর্তিত থাকবে। আবার সেখানে ক্যান্সার এর উপস্থিতি থাকে তবে স্বাভাবিক বর্ণটি সাদা রং ধারণ করবে। সাদা রং ধারণ করলে পরবর্তীতে ক্যান্সার এর উপস্থিতি আরও নিশ্চিত করার জন্য বায়োপসি করা যেতে পারে এবং পরবর্তী চিকিৎসার দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব।

এভাবে খুব সহজেই আপনি জেনে নিতে পারেন আপনার জরায়ুমুখের সুস্থতা।

মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে রোগটি নির্ণীত হলে প্রায় ৮০-৯৬ ভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। তাই দেরি না করে আজই জেনে নিন আপনি সুস্থ আছেন কিনা। নিজে সচেতন হোন, অন্যকে জানান এবং সবসময় সুস্থ্য থাকুন।

লেখক: সাদিয়া ফাতেমা কবীর, শিক্ষার্থী শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ, বরিশাল

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১২

সম্পাদনা: তানিয়া আফরিন, বিভাগীয় সম্পাদক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।