ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে আব্দুর রাজ্জাক (৫০) নামে এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫ জন।
শুক্রবার (৭ জুলাই) রাত ৭টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এর এক ঘণ্টা পরেই মারা যান।
মৃত আব্দুর রাজ্জাক জেলার তারাকান্দা উপজেলার মৃত মাহিমের ছেলে। তিনি গাজীপুরের মাওনাতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন।
শনিবার (৮ জুলাই) দুপুরে মমেক হাসপাতালের ডেঙ্গু ইউনিটের ফোকালপারসন ডা. ফরহাদ হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, হাসপাতালের ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বতর্মানে এই ৩টি ওয়ার্ডে মোট ২৩ জন পুরুষ রোগী ভর্তি আছেন। তারা প্রত্যেকেই সিলেট, জামালপুর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৫ জন ডেঙ্গু রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার ভর্তি হয়েছেন সঞ্জু মিয়া। তিনি জেলার নান্দাইল উপজেলার চানপুর গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন গরু বিক্রি করতে সিলেট গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে ঈদের পরদিন থেকে জ্বর, শরীর ব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা ও পেট ব্যথা অনুভব করি। পরে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছি বলে জানতে পেরে হাসপাতালে ভর্তি হই। এখন আগের চাইতে অনেকটা ভাল আছি।
একই ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ধোবাউড়ার রফিকুল ইসলাম। তিনি ঢাকায় রিকশা চালাতেন। সম্প্রতি জ্বর অনুভব হলে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে তার অবস্থার অবনতি হলে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রক্ত পরীক্ষা করালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানতে পারেন।
এ ঘটনায় ওই দিনই ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখন কিছুটা ভালো। এখানে কোনো ওষুধ কেনার প্রয়োজন হয়নি। সব ওষুধ হাসপাতাল থেকে দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জামালপুরের সরিষাবাড়িতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন মেহেদী হাসান। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। গত ৩০ জুন জ্বরে আক্রান্ত হন। গত ১ জুলাই পরীক্ষা করার পর ডেঙ্গু ধরা পরে। ডেঙ্গু ধরা পরার পরদিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
হাসপাতালের ডেঙ্গু ইউনিটের ফোকালপারসন ডা. ফরহাদ হোসেন হীরা বলেন, প্রতিনিয়ত রোগীর চাপ বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই ৫ থেকে ৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, জামালপুর, ঢাকা ও গাজীপুর থেকে আক্রান্ত হয়ে আসা।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টানাতে অনিহা আছে। রোগীদের প্রতি নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি আলাদা ওয়ার্ড গঠনে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রোগী ভর্তি ৩০ জন পার হলেই চালু করা হবে আইসোলেশন ওয়ার্ড।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০২৩
আরএ