ঢাকা: ঈদের ছুটিতে রোগীদের চিকিৎসায় কোনো ব্যত্যয় ঘটছে কি-না সেটি তদারকির জন্য কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) ঈদের তৃতীয় দিন সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি এই হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, আইসিইউ, ডায়ালায়সিসসহ বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। এমনকি তিনি হাসপাতালের শৌচাগারের পরিবেশ কেমন সেটিও ঘুরে দেখেন। তিনি হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।
হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঈদের ছুটিতে আমি হাসপাতালগুলো তদারকি করব বলে অঙ্গীকার করেছিলাম। সেই হিসেবে গত পরশু ও আজ হাসপাতাল পরিদর্শনে বের হয়েছি। আমরা আরও হাসপাতাল পরিদর্শন করব। এখানে (কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল) যে স্বাস্থ্যসেবা দেখলাম, তাতে আমি সন্তুষ্ট। তবে একটি জিনিস আমাদের করতে হবে। এই হাসপাতালটি অনেক বড়।
তিনি আরও বলেন, আমি সচিব ও ডিজিকে বলছি, আমরা যদি জনবল দিয়ে এই হাসপাতালকে আরও সচল করি, তাহলে ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা মেডিকেলে রোগীর চাপ কমবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমি ঈদের আগে বলেছিলাম, স্বাস্থ্যসেবায় যেন কোথাও বিঘ্ন না ঘটে৷ আমি সেটি পেয়েছি। শুধু ঢাকায় নয়, আমি এই কয়দিন প্রতিটি বিভাগ, প্রতিটি মেডিকেল কলেজের বাইরে যারা তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হয়নি। আমরা এবার ডাক্তারদের থাকা-খাওয়া ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছি। যে কারণে ডাক্তাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে আমরা ইতোমধ্যে মিটিং করেছি। সচিবরাও মিটিং করছেন। স্যালাইনের ঘাটতি যাতে না হয়, সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, ভবিষ্যতে আরও নেব। তবে ডেঙ্গুর সবচেয়ে ভালো ট্রিটমেন্ট হচ্ছে প্রিভেনশন। প্রিভেনশন না করতে পারলে আমি যতই হাসপাতালে নিয়ে আসি লাভ হবে না। সঠিক সময়ে সঠিক রোগীরা যদি হাসপাতালে আসেন, তাহলে সমস্যা হবে না। ডেঙ্গু সম্পর্কে ডাক্তাররা এখন অভিজ্ঞ। আমরা আগে প্রতিরোধ করি। আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজের বাড়ির জায়গাটা পরিষ্কার করি। তাহলে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব থেকে সবাই রক্ষা পাবে। ডেঙ্গুতে বিনা চিকিৎসায় যাতে কেউ মারা না যায়, সে বিষয়ে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, আমরা আজকে এখানে এসেছি। ঈদের পরে আজকে প্রথম অফিস খোলা। আমরা এখানে প্রতিটি রোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-নার্স যারা আছেন, সবার সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা সন্তোষ নিয়ে রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারাও তুষ্টি নিয়ে বলেছেন, ঈদের সময় প্রতিটি চিকিৎসক ও কনসালটেন্টদের ঠিকমতো পেয়েছেন এবং চিকিৎসাও ভালোভাবে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ঈদের ছুটিতে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিতে যাতে কোনো ব্যত্যয় না ঘটে সেটি তদারকি করার অঙ্গীকার করেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
ঈদের আগে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ঈদের ছুটিতে সরকারি হাসপাতালগুলোয় রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। আমি নিজে এটি দেখাশোনা করব।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৪
এসসি/এসআইএ