ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

এইচপিভি টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের সম্পর্ক নেই: স্বাস্থ্যের ডিজি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৪
এইচপিভি টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের সম্পর্ক নেই: স্বাস্থ্যের ডিজি বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর

ঢাকা: জরায়ুমুখ ক্যানসারের (এইচপিভি) টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের কোনো সম্পর্ক নেই বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কনফারেন্স রুমে চলমান এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৪ নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. মো. আবু জাফর বলেন, এইচপিভি টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া টিকা কার্যক্রমের সঙ্গে ধর্মীয় অনুশাসনের কোনো নেতিবাচক সম্পর্ক নেই। এ ধরনের গুজব এবং প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতনভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, গতকাল একটা কেন্দ্রে টিকা প্রদান কার্যক্রম চলাকালে হঠাৎ টিকা নেওয়ার পর দুজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাদের অসুস্থ হওয়া দেখে পরবর্তীতে আরও কয়েকজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়। বর্তমানে এদের সবাই সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। পাঁচজন ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি হলেও কোনো টিকা নেননি। প্রাথমিকভাবে রোগটি ম্যাস সাইকোজেনিক ইলনেস ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া এ ঘটনা তদন্তে কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সাধারণত যে কোসো টিকা দেওয়ার পর খুবই নগণ্য পরিমাণ টিকাগ্রহণকারীর শরীরে সাময়িক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, তখন টিকা গ্রহণকারী শুয়ে বিশ্রাম নিলে খুবই অল্পসময়ের ভেতর ভালো বোধ করে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, সাধারণত যে কোনো টিকা দেওয়ার পর খুবই নগণ্য পরিমাণ টিকাগ্রহনকারীর শরীরে সাময়িক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তখন টিকা গ্রহণকারী শুয়ে বিশ্রাম নিলে অল্প সময়ের ভেতর ভালো বোধ করে। এ বছর এইচপিভি টিকাদানের টার্গেট ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন। গত ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ লাখ ১৭ হাজার ৩২৬ জনকে টিকা প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৩১ শতাংশ। এ পর্যন্ত সাতটি বিভাগে মাত্র ২৭১ জনের শরীরে জ্বর ও ব্যথা বা এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। যেটা সংখ্যার বিচারে খুবই নগণ্য, মাত্র ০.০০০১৪ শতাংশ।

বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচিতে এইচপিভি টিকা-বেলজিয়ামে উৎপাদিত হয়। সারা পৃথিবীতে ১৪০টি দেশে এ টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে যার মধ্যে ১৪টি মুসলিম দেশ, যার মধ্যে সৌদি আরব, কাতার, ইউএই, মালয়েশিয়া, মরক্কো, কুয়েত, মালদ্বীপ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিএএইচ অপারেশনাল প্ল্যানের অন্যতম সফল কার্যক্রম-ইপিআই এর মাধ্যমে নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে ২০২৩ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলা ও ৪টি সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রথম পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৩ অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায়, অবশিষ্ট অন্যান্য ৭টি বিভাগ এবং ৮টি সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসরত ১০-১৪ বছর বয়সী সব কিশোরীদের মাঝে অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ এইচপিভি টিকা প্রদানের লক্ষ্যে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৪ কার্যক্রম আগামী ২৪ অক্টোবর শুরু হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ডা. মো শিব্বির আহমেদ ওসমানী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো: রিজওয়ানুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা. এ বি এম আবু হানিফসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৪
আরকেআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।