দুপুরে বা রাতে খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা কত উঠছে বা নামছে, তা খেয়াল করেছেন কখনও? এমনিতেও রক্তে শর্করা ওঠানামা করেই। একটু বেশি ভাত খেয়ে ফেললে বা মিষ্টি জাতীয় খাবার, ভাজাভুজি বেশি খেলে ‘ব্লাড সুগার’ ওঠানামা করবেই।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে রক্তে শর্করার মাত্রা থাকা উচিত ১৩০ থেকে ১৪০ মিলিগ্রাম/ডিএল। কিন্তু তা যদি ১৮০ মিলিগ্রাম/ ডিএলের বেশি হয়ে যায়, তা হলে বুঝতে হবে, আপনি প্রি-ডায়াবেটিক। আর যদি রক্তে শর্করার মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম/ ডিএল হয়, তা হলে বুঝতে হবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। লাগাতার যদি এই মাপই আসতে থাকে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ডায়াবেটিস যাদের আছে, তাদের যদি খাওয়ার পরে ‘ব্লাড সুগার’ লেভেল ১৮০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম/ ডিএল আসতে শুরু করে, তা হলে খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ আনা জরুরি। বুঝতে হবে, এমন কিছু খাচ্ছেন, যাতে শর্করার মাত্রা খুব বেশি। সে ক্ষেত্রে কৃত্রিম চিনি খাওয়াও বন্ধ করতে হবে।
দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স’ থেকে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় ২০২৪ সালে। সেখানে গবেষকেরা জানিয়েছেন, খাওয়ার আগে ও পরে রক্তে শর্করার মাত্রা কত তা পরিমাপ করলেই বোঝা যাবে, ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না। খাওয়ার আগে রক্তে শর্করার মাত্রা হওয়া উচিত ৭০ থেকে ১২০ মিলিগ্রাম/ ডিএল, আর খাওয়ার দু’ঘণ্টার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা ১৩০ থেকে ১৪০ মিলিগ্রাম হলে তা স্বাভাবিক। এর বেশি হতে শুরু করলেই মুশকিল।
জেনে নিন কোন কোন সময়ে ‘সুগার’ মাপবেন
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পরীক্ষা করতে হবে। রাতের খাওয়ার সঙ্গে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার তফাত রাখতে হবে।
প্রাতরাশ সারার ২ ঘণ্টা পরে ফের মাপতে হবে।
দুপুরের খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এক বার মেপে নেওয়া জরুরি।
দুপুরের খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে মাপতে হবে।
রাতে খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে মাপুন।
রাতে খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর আরও এক বার।
খাবার খাওয়ার আগে এবং খাবার খাওয়ার পর শর্করার পরিমাণ উনিশ-বিশ হতে থাকলে ভাত, রুটি ইত্যাদি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দানাশস্য, যেমন ডালিয়া, কিনোয়া, ওটস, ফল বেশি করে খেতে হবে। খাওয়ার পরে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য হাঁটাহাঁটিও করতে হবে।
এএটি