ঢাকা: হযরত শাহজালাল (র.) আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে রোববার দেশের প্রথম অ্যানিমেল কোয়ারেন্টাইন স্টেশনের উদ্বোধন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, এমপি।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব উজ্জল বিকাশ দত্ত, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মাহমুদ হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোছাদ্দেক হোসেন সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অ্যানিমেল কোয়ারেন্টাইনের মাধ্যমে OIE (World Animal Health)-এর একটি শর্ত পূরণ হলো। ’’
তিনি বলেন, ‘‘প্রাণী ও প্রাণিজাত পণ্যের মাধ্যমে দেশের ভেতরে প্রাণী থেকে মানুষ সংক্রমিত হতে পারে এমন রোগব্যাধি প্রবেশ রোধ করা সম্ভব। এ জন্যই পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই স্থলবন্দর, নৌবন্দর এবং বিমানবন্দরে অ্যানিমেল কোয়ারেইনন্টাইন স্টেশন রয়েছে। ”
সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ‘প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প’ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, প্রাণী থেকে মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে এমন রোগের সংখ্যা শতকরা ৭০ ভাগ। এই রোগগুলো একদেশ থেকে অন্যদেশে সরাসরি প্রাণীর মাধ্যমে অথবা প্রাণিজাত পণ্যের মাধ্যমে ছড়ায়।
মানুষ এবং প্রাণীর জন্য প্রাণঘাতী এসব রোগ নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশে স্থাপিত হতে যাচ্ছে ২৪টি স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে অ্যানিমেল কোয়ারেইন্টাইন স্টেশন।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত তিন দশকে এ দেশে পোল্ট্রিশিল্প ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। এই শিল্পের বিনিয়োগ যেমন বেড়েছে, তেমনি ডিম ও মাংসের উৎপাদনও বেড়েছে। কিন্তু, পোল্ট্রি শিল্পের অধিকাংশ উপকরণ, যেমন এক দিন বয়েসী মুরগির বাচ্চা, পোল্ট্রি ফিড ও টিকা ইত্যাদি আমদানিনির্ভর।
বর্তমানে প্রতিবছর গড়ে ২৫ লাখ একদিন বয়েসী মুরগির বাচ্চা ও তিনশ কোটি মাত্রা টিকা ও প্রচুর পাখি শুধুমাত্র হযরত শাহজালাল (র.) আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা হয়।
ফলে, এই শিল্পকে অধিক বিকশিত করার ক্ষেত্রে কোয়ারেইন্টাইন স্টেশনগুলো যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।
দেশে কোয়ারেইন্টাইন স্টেশনের মাধ্যমে যেমন জেনেটিক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে; তেমনি গবাদিপশুর ক্ষুরা, তড়কা, পিপিআর, গোটপক্স ইত্যাদি রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব হবে।
এই সব রোগের কারণে প্রতিবছর দেশে হাজার হাজার কোটি টাকা মূল্যের পশুপাখির মৃত্যু হয় এবং অসুস্থতার কারণে পশুপাখির উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। ফলে, দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখা সম্ভব হয় না।
এ কারণে প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের বাস্তবায়নের মাধ্যমে যেমন মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা ও প্রাণীর স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব হবে; তেমনি পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পকে লাভজনক বাণিজ্য হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৪ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৩
বিজ্ঞপ্তি/সম্পাদনা: সোহেলুর রহমান, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর