ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

গ্রামে গর্ভবতী নারীর শরীরে মাত্রারিক্ত সীসা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৪
গ্রামে গর্ভবতী নারীর শরীরে মাত্রারিক্ত সীসা ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশের গ্রাম‍াঞ্চলে গর্ভবতী নারীদের শরীরে ক্ষতিকর সীসা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ছয়গুণ বেশি। এটা খুবই আশঙ্কাজনক বলে মনে করছেন গবেষকরা।



বৃহস্পতিবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশের সীসা দূষণ পরিস্থিতি’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়ান হেলথ বাংলাদেশ মুভমেন্ট এবং ডক্টরস ফর হেলথ নামের তিনটি সংগঠন এ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. স্টিভ লোভি ও আন্তর্জাতিক কলেরা গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এ গবেষণা পরিচালনা করেছে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে গবেষণা পত্রের প্রাথমিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. স্টিভ লোভি।
 
এ সময় তিনি জানান, আগে মনে করা হতো শুধু শহরেই ক্ষতিকর সীসা মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। কিন্তু এটি গ্রাম‍াঞ্চলেও আশঙ্কাজনকহারে মানুষের মাঝে পাওয়া গেছে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের মধ্যে এই সীসার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ছয়গুণ বেশি।

তিনি বলেন, দেশের চারটি জেলা টাঙ্গাইল, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জের ৪৩০ জন গর্ভবতী নারীর ওপর এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়। যার মধ্যে ৪৬ শতাংশ গর্ভবতী নারীর শরীরে ১৮ মাইক্রোগ্রামের বেশি সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কিন্তু সাধারণত মানব শরীরে সীসার সহনীয় মাত্রা ধরা হয় ৩.৬ মাইক্রোগ্রাম।

স্টিভ লোভি জানান, যাদের শরীরে সীসার পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে তাদের সবার বাড়ি কৃষি জমির পাশে। মূলত কৃষিতে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ওই সীসার পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
 
সংবাদ সম্মেলনে রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান জানান, সাধারণত ১০ মাইক্রোগ্রাম সীসা শরীরে থাকলে শতকরা ২৫ ভাগ ঝুঁকি থাকে। কিন্তু এর বেশি দেখা দিলে শতকরা ৯০ ভাগ ঝুঁকি তৈরি হয়।
 
সীসার কারণে হৃদরোগ, শিশুদের মানসিক বিপর্যয়, কিডনি নষ্ট, শিশু জন্মানোর সময়ে মৃত্যু, রক্তশূন্যতায় শরীর অবশ, অমনোযোগ, পেটের অসুখ, বমিবমি ভাব প্রভৃতি দেখা দেয়।
 
বক্তারা জানান, সীসা প্রতিরোধে সচেনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। সবার মাঝে এ বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে সারাদেশে এর একটি জরিপ ও গবেষণা পরিচালনার গুরুত্বও তুলে ধরেন তারা।
 
এসময় উপস্থিত ছিলেন-বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, ওয়ান হেলথ বাংলাদেশের সম্বয়ক ডা. নীতিশ দেবনাথ ও ডক্টরস ফর হেলথ এনভায়রনমেন্টে সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম আবু সাঈদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৪/আপডেট ২০০১ ঘণ্টা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।