ঢাকা: ওজন কমাতে আমাদের চেষ্টার অন্ত নেই। কখনো না খেয়ে চরম ডায়েট আবার কখনোবা ব্যায়াম করতে করতে একশেষ।
জাম্বুরা/বাতাবি লেবু
জাম্বুরা বা বাতাবি লেবু আপনার অভ্যন্তরীণ বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি পোড়াতে সহায়তা করে থাকে। এই ফল অল্পতেই আপনার পেট ভরিয়ে দীর্ঘ সময় কম ক্যালোরির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। উপরন্তু এ ফল আশযুক্ত হওয়ায় আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। তাই সালাদ অথবা জুস হিসেবে বাতাবি লেবু আপনার খাবারের তালিকায় রাখতে ভুলবেন না যেন।
সেলারি
সেলারিকে সাধারণত সবজি হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। হঠাৎ করে দেখলে একে ধনেপাতা বলে ভুল হতে পারে। এটা খুবই কম ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার। আপনি বেশি খেয়ে ফেললেও তবে বাড়তি ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করবে সবজিটি। সেলারিতে পানির ভাগ বেশি হওয়াতে এটা সুষম খাবারের উপকরণ হতে পারে সহজেই। কাজেই খাবারের সঙ্গে সঙ্গে সেলারি খান।
গোটা শস্য
গবেষণায় দেখা গেছে, গোটা শস্য প্রক্রিয়াজাত শস্য থেকে অধিক স্বাস্থ্যসম্মত এবং পুষ্টিকর। এ ধরণের শস্য খাওয়ার বড় সুবিধা হলো আপনার সহজে ক্ষুধার্ত হতে দেবে না। গোটা শস্য নানা ধরনের ভিটামিন, খনিজ এবং কার্বোহাইড্রেটের আধার। এতে চর্বি বা ফ্যাটের পরিমাণ খুবই অল্প।
গ্রিন টি
গ্রিন সবুজ অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং বিপাকে সাহায্য করে। দেহের মেদ কমিয়ে আপনাকে আকর্ষণীয় স্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে গড়ে তুলবে। কাজেই হালকা মেজাজের এক কাপ গ্রিন টি নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ওমেগা-৩
ওমেগা-৩ হলো শরীরের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড। শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে এর জুড়ি নেই। এই ফ্যাটি এসিড দ্রুত শরীরের চর্বি পুড়িয়ে রক্তে লিপিডের ভারসাম্য বজায় রাখে। বিভিন্ন ধরনের বাদাম, সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ পাওয়া যায়।
কফি
আমরা সবাই জানি, কফিতে থাকা ক্যাফেইন আমাদের দেহ সজাগ ও সজীব রাখে। এই ক্যাফেইন রক্তের মাধ্যমে আমাদের ফুসফুসে গিয়ে হার্টবিট বাড়িয়ে দেয়। রক্তে অধিক পরিমাণে অক্রিজেন গ্রহণ করে অতিরিক্ত ক্যালোরি ধ্বংস করে।
তবে কফির সঙ্গে ক্রিম, দুধ বা চিনির ব্যবহার কফির গুণাগুণকে নষ্ট করে দেয়। তাই এর পরিবর্তে দারুচিনি বা এ জাতীয় অন্য কিছু ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যাভাকাডো
মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার একটি ফল অ্যাভাকাডো। অ্যাভাকাডো তিনভাবে চর্বি কমায়। এর উপাদান ক্ষতিকর চর্বি পুড়িয়ে শরীরের কোষ নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে।
এছাড়া এট শরীরের কোলেস্ট্ররেলের পরিমাণ কমায়, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। সেই সঙ্গে চোখ এবং চুল ভালো রাখতেও অ্যাভাকাডোর জুড়ি নেই। আপনি চাইলে সকালে অর্ধেক অ্যাভাকাডো, টমেটো এবং সিমের সঙ্গে সালাদ হিসেবে খেতে পারেন। অথবা দারুচিনি, অ্যাভাকাডো আর নারকেল দুধ মিশিয়ে একটা মজাদার মিশ্রণ তৈরি করেও খেতে পারে।
মশলাযুক্ত খাবার
যে কোনো মশলাদার খাবার চর্বি কমাতে ভূমিকা রাখে। এতে অতিরিক্ত চর্বি থাকে না। উপরন্তু এটা আপনাকে খাদ্যে বাড়তি স্বাদও দেবে। মশলা হিসেবে আপনি সালাদে মরিচ বা বিভিন্ন ধরনের সসেজও ব্যবহার করতে পারেন।
তকমা
প্রোটিন, ফাইবার ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের আধার বলা যেতে পারে তকমা দানাকে। ক্ষুধা কমিয়ে দেহে এক ধরনের হরমোনের নিঃসরণ ঘটায় যা চর্বি কাটানোর একটি বড় উপায়। মাত্র ১৫ মিনিট কিছু তকমা দানা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, দেখবেন প্রকৃত আকারের চেয়ে প্রায় ১০ গুন বড় হয়ে যাবে।
তকমা অনেক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখবে এবং অতিরিক্তি খাওয়া থেকে বিরত রাখবে। আপনি শরবত, দই, সালাদ কিংবা মিস্টি জাতীয় আরো খাবারের সঙ্গে তকমা যুক্ত করতে পারেন।
ব্রাজিলিয়ান নাট
মজাদার সুস্বাদু খাবের মধ্যে ব্রাজিলিয়ান নাট বা বাদাম অন্যতম। তবে অন্য খাবারের চেয়ে ব্রাজিলিয়ান নাট অধিকহারে চর্বি কমায়। এ বাদাম দ্রুত হজমে সাহায্য করে। থাইরয়েড হরমোনকে টি-৩ হরমোনে রূপান্তর করে কর্মক্ষমতা বাড়ায়। বিভিন্নভাবে বাদাম খেতে পারেন। ব্লেন্ড করে দুধের সঙ্গে অ্যালাচ ও ভ্যানিলা মিশিয়ে খেতে পারেন আবার পেঁপে কিংবা আমা মিশিয়েও খেতে পারেন। চাইলে এটাকে আপনি সালাদের উপকরণ হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৪