ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শিশুদের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ব্র্যাক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৪
শিশুদের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ব্র্যাক ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বড়দের তুলনায় শিশুদের যক্ষ্মা শনাক্ত এবং নিয়ন্ত্রণের কাজটি বেশ কঠিন। তবে এই কঠিন কাজটি সফল ভাবেই করে যাচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক।



সম্প্রতি গাজীপুর জেলায় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে ব্র্যাকের ডটস কর্মসূচি পর্যবেক্ষন করে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রাপ্ত বয়স্ক রোগীদের পাশাপাশি যক্ষ্মা আক্রান্ত শিশুদেরও নিয়মিত ওষুধ সেবনের দায়িত্ব পালন করছেন ব্র্যাকের নিজস্ব স্বাস্থ্য সেবীরা।

ব্র্যাক-এর জেলা ম্যানেজার হিমাংশু মন্ডল বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে গাজীপুরে ১১৩ শিশুকে ডটস এর আওতায় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, শিশুদেরও বড়দের মতো যক্ষ্মা হয়। কফ পরীক্ষার মাধ্যমে যত সহজে বড়দের এ রোগ শনাক্ত করা যায়, শিশুদের বেলায় কিছুটা সুবিধা হয়। শিশুরা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় শ্বাসনালী বা ফুসফুস থেকে নির্গত লালা, কফ বা থুথু বের করতে পারে না। তাই তাদের যক্ষ্মা শনাক্ত করা কঠিন।

হিমাংশু মন্ডল বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা সম্ভাব্য রোগের উৎস ও রোগী চিহ্নিতকরণ এবং ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শের ব্যবস্থা করেই শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করেন।  

বিশ্বখ্যাত স্বাস্থ্য সাময়িকী দ্য ল্যানসেটের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ শিশু যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে প্রায় ১৩ লাখ লোক প্রাণ হারায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শৈশবে অনেক ক্ষেত্রে যক্ষ্মা ও একাধিক ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা ধরা পড়ে না। বাংলাদেশে বর্তমানে শিশু যক্ষ্মা রোগ শনাক্তকরণের হার ৩ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এই হার ৬ থেকে ১০ শতাংশ।

তথ্য-উপাত্ত ও পূর্ববর্তী গবেষণার ওপর ভিত্তি করে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে ১৫ বছরের নিচে ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৮০০ লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছে।

এই রোগে আক্রান্তদের প্রায় ৪০ শতাংশ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় এবং ২৮ শতাংশ আফ্রিকায় বাস করে।

সরকারি হিসেবে, ঢাকা বিভাগের ১২২ উপজেলায় ২০১৩ সালে চিকিৎসাপ্রাপ্ত শিশু যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ছিল ৭৩২। আর ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে ৪৭৬।

শিশুদের যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসার বিষয়ে ব্র্যাকের স্বাস্থ্যসেবিকা শিরীন বেগম বলেন, টস কর্মসূচির আওতায় কোনো রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় না।

তিনি জানান, একজন রোগীকে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে সেবিকার বাড়িতে আসতে হয়। রোগী আসার পর স্বাস্থ্য সেবিকা তাকে সেবনবিধি অনুযায়ী ওষুধ খাইয়ে দেন।

কোনো রোগী সেবিকার বাড়িতে যেতে না পারলে সেবিকাই উল্টো রোগীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে আসেন।

স্বাস্থ্য সেবিকা জানান, রোগীর কোনো সমস্যার সমাধান দিতে না পারলে তাকে নিকটস্থ ব্র্যাক অফিস বা পিওকে বিষয়টি জানানো হয়।

এছাড়া কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেলে রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গাজীপুরে প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ জনের জন্যে একজন করে স্বাস্থ্য সেবিকা রয়েছেন।

চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৩ হাজার ৯ জন রোগীকে ডটস এর সেবা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।