ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ব্রণ ও তার প্রতিকার

ডা. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, বিভাগীয় সম্পাদক, স্বাস্থ্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৫
ব্রণ ও তার প্রতিকার

বয়ঃসন্ধির শুরু থেকে ছেলে মেয়েদের ত্বকে ব্রণের প্রবণতা দেখা দেয়। তখন তাদের অনেকে সৌন্দর‌্য্য নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে।

পরিসংখ্যান বলছে, সারা পৃথিবীতে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ টিনেজার ব্রণজনিত সমস্যায় ভোগে।

প্রতিবছর গোটা বিশ্বে প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন তরুণ তরুণী এ রোগে আক্রান্ত হয়। সংখ্যার দিক থেকে এ রোগ অস্টম। তরুণীরা এ সমস্যায় তরুণদের চেয়ে কিছুটা বেশি ভোগে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু হয়ে ৩০ বছরের মধ্যে এ রোগ চলে যায়। কারো কারো একটু একটু দেরিতে এ রোগ শুরু হয়। ৪ শতাংশ লোক ৪০ বছর পর্যন্ত এ রোগে ভোগে।

ব্রণ কেন হয়

এটা ত্বকের একটা ক্রনিক (দীর্ঘস্থায়ী) সমস্যা। আমাদের ত্বকের নিচে যে সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ড বা তৈলগ্রন্থি থাকে। বেশি কাজের জন্য এবং এর সাথে ঘর্মগ্রন্থী বড় হয়ে যাবার কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়।  

তৈলগ্রন্থী ও ঘর্মগ্রন্থীর অস্বাভাবিকতার জন্য আবার শরীরে বেশি পরিমাণ এন্ডোজেন হরমোন যেমন টেস্টোস্টেরন হরমোন দায়ী।

ব্রণের সাথে জীনের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে জেনেটিক সম্পৃক্ততা রয়েছে ব্রণের সাথে।

ব্রণ কোথায় হয়

১. সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় মুখমণ্ডল
২. ত্বকের উপরের অংশ।
৩. পিঠের নানা অংশে।

ব্রণের ক্ষতিকর প্রভাব

১. জটিল ধরনের ব্রণ ত্বকে গর্ত করে দিতে পারে।
২. টিনেজার মনোজগতে এই ব্রণ মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলে।
৩. তরুণীরা দুঃশ্চিন্তা ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এমনকি কারো কারো মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা যায়।
৪. আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি দেখা দেয়। স্বাভাবিক কাজ কর্ম বাধাগ্রস্ত হয়।

খাবারের সাথে ব্রণের সম্পর্ক

গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের ফুড সিস্টেম এক্ষেত্রে প্রখর মাত্রায় একটা ভূমিকা পালন করে। শর্করা জাতীয় খাবার যেমন মিষ্টিজাতীয় খাবার, দুগ্ধজাতীয় খাবার খেলে ব্রণ মারাত্মক আকার ধারণ করে।

ব্রণ কিভাবে নিয়ন্ত্রণ বা প্রশমন করবেন

১. আপনার মুখমণ্ডল পরিষ্কার রাখুন। প্রতিদিন দুইবার মুখ পরিষ্কার করুন। এতে করে ত্বকের মৃতকোষ ও অতিরিক্ত তৈল দূরীভূত হয়।

অনেকেই মনে করেন বার বার মুখ ধোয়া ব্রণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। কিন্তু গবেষণা বলছে অন্য কথা। এতে ব্রণের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। কারণ এতে ত্বকের প্রদাহ অনেক ক্ষেত্রে বেড়ে যায়।

খুব গরম পানি দিয়ে মুখ না ধুয়ে হালকা বা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়া ভালো। স্বল্পমাত্রায় ফেসিয়াল ক্লিনসার ব্যবহার করতে হবে।  

২. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি ব্রণের চিকিৎসার মধ্যে থাকেন তবে অনেক ক্ষেত্রেই ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

৩. মেক আপে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ফাউন্ডেশন ও পাউডার ব্যবহার না করাই ভালো। মেকআপ নিলে বাসায় ফিরে দ্রুত পরিষ্কা করতে হবে।

৪. চুল পরিষ্কার রাখতে হবে। অনেকেই মনে করেন, চুল পরিষ্কার করার সাথে ব্রণের সম্পর্ক কী? ব্রণের সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে তাই চুল ও মাথা পরিষ্কার রাখা জরুরি।

৫. মুখে হাত দেওয়া এবং ত্বক চুলকানো এবং খুটানো থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। সম্ভবত এই কাজটি সবচেয়ে কঠিন। তারপরও মুখে হাত দেয়া এবং ব্রণ খোঁটা থেকে একেবারে বিরত থাকুন।

৬. রোদ থেকে দূরে থাকুন। রোদ ত্বকের প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়। বাইরে গেলে সবসময় রোদের ক্রিম ব্যবহার করুন।

৭. তাজা ফলমূল শাকসবজি খান।

৮. নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

৯. প্রচুর পানি পান করুন। প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।