ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

হাই হিলে স্বাস্থ্যহানি

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৫
হাই হিলে স্বাস্থ্যহানি

ঢাকা: জুতোর মধ্যে হাই হিল ফ্যাশন সচেতন নারীদের কাছে খুব জনপ্রিয়। হাই হিল পরলে শুধু লম্বাই দেখায় না, বরং সাজে এনে দেয় আভিজাত্যের ছোঁয়া।



তবে হাই হিল স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপযোগী তা নিয়ে অনেকের মনেই রয়েছে নানান প্রশ্ন। হাই হিল ওয়েভ শেপড হওয়ার ফলে পায়ের পাতার সামনের দিকে চাপ পড়ে। সারাদিন হাঁটাহাঁটি করার পর পায়ে ব্যথা হতে পারে। এ কারণে পায়ের ফুট বলের উপর (সামনের অংশ) হলুদ রঙের গোলাকৃতি শক্ত চাক তৈরি হয়। এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী পায়ের সমস্যা, পেশিতে ব্যথা, ব্যাক পেইন, হাঁটু, ঘাড় ও পায়ের আঙ্গুলে ব্যথা হতে পারে।  

সু বা স্লিপারে পা সমান্তরালভাবে থাকে বলে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে। অন্যদিকে, হিল জুতোয় পেছনের হিল অংশ সামনের অংশের তুলনায় উঁচু, তাই শরীরের সব ভার পায়ের সামনের অংশে পড়ে। এতে করে বডি ওয়েট ড্রিসট্রিবিউশনে ভারসাম্য না থাকায় লোয়ার ব্যাক পেইন হতে পারে।



দীর্ঘদিন হিল পরার কারণে স্নায়ুতে ব্যথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে হিল যত বেশি উঁচু হয়, শারীরিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০ শতাংশ হারে বাড়তে থাকে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এক বছরে গড়ে দুই হাজার নারী হাই হিল পরার কারণে পা মচকে যাওয়া ও পায়ের সমস্যায় ভোগেন।  

হাই হিল পরার পর হাঁটার সময় চলাফেরার ভঙ্গি পরিবর্তিত হওয়ার সময় শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও হাঁটু, গোড়ালি, হিপ, মেরুদণ্ড, পায়ের পেশিতে চাপ পড়ে ফলে ক্রোনিক ডিসঅর্ডার দেখা দেয়।



লন্ডনের কলেজ অব পডায়েট্রির একটি গবেষণায় দেখা গেছে, হাই হিল পরার একঘণ্টার মধ্যেই বেশিরভাগ নারীদের পায়ে ব্যথা শুরু হয়। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই সঠিক মাপের হিল না পরার জন্য পায়ের ব্যথায় ভোগেন। আবার তাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ নারী মাপে ছোট হবে জেনেও পছন্দের হাই হিল পরেন বলেও দেখেছেন গবেষকরা।

এর কারণ হিসেবে তারা জানান, পছন্দের ডিজাইনের হিল তাদের পায়ের মাপে নেই। তাই আকারে কিছু ছোট হলেও সেটাই কিনে নেন তারা।



সবসময় হিল পরলে পায়ের শিরা ও ধমনী উঁচু হয়ে যায়। এছাড়াও মেরুদণ্ড বক্রাকৃতির হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন হাই হিলের আকার বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন মোটা, চিকন বা শার্প। এই রকমভেদের কারণে পায়ের অবস্থান স্বাভাবিক থাকে না। এতে স্বাভাবিক রক্তচলাচল ব্যাহত হয়। অনেকসময় রক্তনালী ছিঁড়েও যেতে পারে। হাই হিল হাঁটুতে ওয়েট ডিসট্রিবিউশন করে বলে অনেকে আর্থ্রাইটিসের সমস্যায়ও ভোগেন।  



তবে হিলপ্রেমীদের জন্য পডায়াট্রিস্ট, ওর্দ্যাহিল ও ওয়েইল ইনটিগ্রেটিভ ফুটওয়্যারের প্রতিষ্ঠাতা ফিল ভ্যাসিলির টিপস, সবসময় হিল না পরাই ভালো। তবে যদি পরতেই হয় তাহলে একের অর্ধেক বা দুই ইঞ্চির বেশি হিল পরা ঠিক নয়।

তবে এখানেও কথা রয়েছে, দুই ইঞ্চি হিল পরলেও তাতে যেন পায়ের গোঁড়ালির সঙ্গে ফুট বলের যথেষ্ট সংযোগ থাকে, তা খেয়াল রাখতে হবে।

ভ্যাসিলি আরও জানান, হাই হিল পরার আগে ৩০ সেকেন্ড ও খোলার পরে ৩০ সেকেন্ডের একটি এক্সারসাইজ করা প্রয়োজন।  
সেক্ষেত্রে মেঝেতে পা টান করে বসে আলতো করে পায়ের আঙ্গুল একে একে সামনে, পেছনে ও উপর দিকে টানতে হবে। এভাবে একই ব্যায়াম পাঁচবার করতে হবে। তবে যারা সবসময় হিল পরেন, তাদের দিনে তিনবার এটা করা উচিত বলে মনে করেন ফিল ভ্যাসিলি।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।