ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ভেজাল খাদ্য

বছরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩০ লাখ মানুষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৫
বছরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩০ লাখ মানুষ ছবি: শাকিল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ভেজাল খাদ্য গ্রহণে প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন বলে জানিয়েছে উন্নয়ন সংস্থা সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র)।

মঙ্গলবার (০৭ এপ্রিল) বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।



‘নিরাপদ পুষ্টিকর খাবার, সুস্থ জীবনের অঙ্গীকার’ স্লোগানে ৭ এপ্রিল পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। দিবসটিতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকাসহ ৪৫টি জেলায় একযোগে মানববন্ধন করছে সুপ্র।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) গবেষণা তুলে ধরে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। যার অন্যতম কারণ ভেজাল খাদ্য।

খামার থেকে আমাদের কাছে খাদ্য আসার যে প্রক্রিয়া তার বিভিন্ন স্তরে কীটনাশক, কার্বাইড, ফরমালিন মেশানো হয়। এভাবে বেঁচে থাকার প্রধান নিয়ামক খাদ্যকে বিষময় করে তোলা হচ্ছে। ভেজাল খাদ্য গ্রহণে দীর্ঘমেয়াদি ক্যান্সার, স্মৃতিভ্রম, কিডনি, লিভার বিকলসহ মারাত্মক রোগ হচ্ছে।

ভেজাল ও অনিরাপদ খাদ্য প্রায় দু’শতাধিক রোগ সৃষ্টি করে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ৫ বছরের নিচে শিশুদের প্রায় ৪০ শতাংশ রোগের জন্য দায়ী এ অনিরাপদ খাদ্য (ভেজাল খাদ্য)। অনিরাপদ খাদ্যের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর ৫৮ কোটি বিশ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ৩৫ কোটি দশ লাখই মৃত্যুবরণ করেন।

নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি আমাদের মৌলিক অধিকার উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, ভেজাল খাদ্য শুধু স্বাস্থ্যহানিই ঘটাচ্ছে না, আগামী প্রজন্মের সুস্থ জীবনের অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশে ফল থেকে শুরু করে সব খাদ্যপণ্যে বিষাক্ত রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে।

দেরিতে হলেও ফরমালিন আইন-২০১৫ পাস হয়েছে। ফলে নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা পাবেন বলে জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। তবে শুধু আইন করে নয় বরং উৎপাদন পর্যায় থেকে খাদ্যে রাসায়নিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান তারা।

তাদের অভিযোগ- স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশ রোল মডেল হলেও, সেবা পেতে হয়রানি পোহাতে হয়, এক্ষেত্রে ঘুষ হিসেবে অর্থও দিতে হয় সাধারণ জনগণকে। সরকার স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসা সেবা দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক করলেও স্বাস্থ্য পরীক্ষার যন্ত্রাংশের অভাব ও ঔষধ সংকটে সেবা পাচ্ছেন না জনগণ।

বক্তারা বলেন, জনগণের স্বাস্থ্য অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদানে পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশও অঙ্গীকারবদ্ধ। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে দেশে এখনই ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপদ খাদ্য আইন বাস্তবায়ন না করা হলে খাদ্যের কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে।

তাই স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের সিংহভাগ বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় না করে, জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে ব্যয় করার দাবি জানান তারা।

সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের যথাযথ বাস্তবায়ন ও তদারকি জোরদার, ফরমালিন ও নিরাপদ খাদ্য আইন বাস্তবায়ন, বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, স্থানীয় পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ, পাঠ্যপুস্তকে পুষ্টি শিক্ষা অন্তর্ভুক্তিকরণ, নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে প্রবন্ধ প্রকাশসহ ৯ দফা দাবি জানান বক্তারা।

মানববন্ধনে সুপ্র’র সহযোগী সমন্বয়নকারী মো. আরিফুল ইসলাম, সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলাম, সাকেরা নাহার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৫
আরইউ/এলকে/আরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।