ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ভেজাল প্যারাসিটামলে শিশুমৃত্যু

ছয়জনের দশ বছর করে কারাদণ্ড-জরিমানা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৫
ছয়জনের দশ বছর করে কারাদণ্ড-জরিমানা ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ পানে শিশুমৃত্যুর মামলায় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিসিআই কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক, পরিচালকসহ ৬ জনকে দশ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।



সোমবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা বিভাগীয় বিশেষ জজ এম আতাউর রহমানের আদালত এ দণ্ডাদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক বদরুদ্দোজা, পরিচালক শাজাহান সরকার, নূরুন্নাহার বেগম, শামসুল হক, ব্যবস্থাপক আয়েশা খাতুন ও ব্যবস্থাপক এমতাজুল হক।

রায় ঘোষণার সময় পরিচালক শাজাহান সরকার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে বাকিরা পলাতক আছেন।

রাজধানীর ঝিগাতলার বিসিআই কোম্পানির উৎপাদিত প্যারাসিটামলে বিষাক্ত দ্রব্যের উপস্থিত থাকার প্রমাণ পেয়ে ১৯৯২ সালের ১৮ নভেম্বর ওষুধ প্রশাসন অফিদফতরের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের চৌধুরী মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

এটি একই অভিযোগে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়টির রায়। এর আগে গত বছরের ২২ জুলাই অন্য একটি মামলায়  অপর ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালসের তিনজনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কোম্পানির প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, পরিচালক ডা. হেলানা পাশা ও প্রধান উতপাদন কর্মকর্তা নৃগেন্দ্র নাথ বালা।

প্রায় ২৩ বছর আগে দায়ের করা এসব মামলার আসামিদের সাক্ষ্য ও রায়ের বিবরণ থেকে জানা গেছে, ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ঢাকা শিশু হাসপাতালে কিডনি বিকল হয়ে শিশুমৃত্যুর হার অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়।

এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক বিগ্রেডিয়ার (অব.) মকবুল হোসেন ১৯৯১ সালের ৩ জুলাই ওষুধ প্রশাসনকে মৌখিকভাবে বিষয়টি অবগত করেন। ওই সময়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ভেজাল প্যারাসিটামল সেবনে শিশুমৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়।

এরপর ১৯৯২ সালের ২৫ নভেম্বর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিদর্শক আবুল খায়ের চৌধুরী ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি থেকে তাদের উৎপাদিত ফ্লামোডল নামক প্যারাসিটামল সিরাপ নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও)ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠান। একই সময়ে পাঠানো হয় বিসিআই কোম্পানির প্যারাসিটামল ওষুধের নমুনাও।

নমুনা পরীক্ষা শেষে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি তাদের অভিমতে জানায়, প্যারাসিটামল তৈরিতে ব্যবহৃত প্রোপাইলিন গ্লাইকলের পরিবর্তে চামড়া শিল্পে ব্যবহৃত ডাই ইথিলিন গ্লাইকল ব্যবহার করা হয়েছে। এসব প্যারাসিটামল সিরাপ সেবনে কিডনি বিকল হয়ে হতভাগ্য ওইসব শিশুদের মৃত্যু হয়েছে।

এরপর আবুল খায়ের চৌধুরী বাদী হয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৫
এমআই/জেডএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।