দিনাজপুর: চিকিৎসকদের লাগাতার ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে দিনাজপুর আঞ্চলিক ডায়াবেটিস ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতাল।
বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে গত ২৪ জানুয়ারি থেকে চিকিৎসকেরা আংশিক ধর্মঘট শুরু করেন।
এদিকে, চিকিৎসকদের ধর্মঘটে চরম দুভোর্গে পড়েছেন বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের হাজার হাজার রোগী। ফলে বাধ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গিয়েছেন বেশিরভাই রোগী। তবে কোনো উপায় না থাকায় সেবা না পেলেও রয়ে গেছেন ২০ জন রোগী।
বুধবার সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ বেডে রোগী নেই। সেবা না থাকায় চলে গিয়েছেন অনেকে।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা থেকে আসা মোসলেম আলী ভর্তি রয়েছেন। তিনি জানান, ধর্মঘটের কারণে তিনি কোনো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ভিটে-মাটি বন্ধক দিয়ে এখানে চিকিৎসা করতে এসেছি। এখন কি করবেন বুঝতে পারছেন না।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী গ্রামের শামসুল হক (৭০) জানান, তাকে নীলফামারী থেকে এ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত ৮ জানুয়ারি তিনি এখানে এসেছেন। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে মাত্র ২ বার দেখেছেন চিকিৎসক। কিন্তু হাসপাতালের খরচ দিতে হচ্ছে।
এদিকে, বুধবার বিকেলে শহরের কালিতলায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবে জেলা ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. সফিকুল হক ছুটু করেন, দেশের অন্যতম ও রংপুর বিভাগের একমাত্র একমাত্র ডায়াবেটিসের উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র দিনাজপুর ডায়াবেটিস হাসপাতাল দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সঙ্গে চিকিৎসা দিচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করে ১৩ জন চিকিৎসক অযৌক্তিক দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেছেন। ফলে ভর্তিকৃত ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আলতাফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের দুর্নীতি ও ব্যর্থতায় হাসপাতালটি আজ ধ্বংসের দিকে। হাসপাতালে চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য নিয়ে আলোচনার পরও কমিটি কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় আমরা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছি। তবে আমাদের দাবি পূরণ হয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে।
সেবা নিতে আসা ও স্থানীয়রা জানান, চিকিৎসক ও কমিটির দ্বন্দ্বের কারণে এ অবস্থা চলছে। এতে ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। তারা দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে চিকিৎসকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
এসআর