আর নয় ইনজেকশন পুশ। ইনসুলিন এখন গিলে খাওয়া যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নায়াগ্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেরি ম্যাককোর্ট এই গবেষণা দলের প্রধান। তিনি জানান, এক ধরনের কোলেস্টোসামস তারা ক্যাপসুল টিউবে সংরক্ষণ করতে পেরেছেন যা মুখে গিলে ফেলা যাবে আর তার ক্ষুদ্র কোষগুলো পাকস্থলী থেকে শরীরের রক্তপ্রবাহে ছড়িয়ে পড়বে।
এখানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটিই ছিলো পাকস্থলী থেকে শরীরে ছড়ানো।
ইনসুলিনের মতো প্রোটিনগুলো পাকস্থলীর অম্ন, গ্যাস, তেল-চর্বির পরিবেশে খাপ খাওয়াতে পারেনা। ফলে অন্ত্রে-ক্ষুদ্রান্ত্রে পৌঁছানোর আগেই তা কর্মক্ষমতা হারাতে থাকে। আর যখন রক্তনালীতে পৌঁছায় তখন তা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।
তবে কোলেস্টোসামস’র নতুন কোষগুলো তৈরি হয়েছে এক ধরনের লিপিড মোলেকিউল (অনু) দিয়ে যা চর্বি ও এসিড প্রতিহত করে। আর এটি লিপোসামস এর মতো লিপিডভিত্তিক ওষুধবাহী অন্য ট্যাবলেট-ক্যাপসুলগুলোর চেয়ে ভিন্ন।
অধ্যাপক মেরি ম্যাককোর্ট বলেন, লিপোসামস সাধারণত পলিমারআবৃত করে প্যাকেট করা হয়। কিন্তু এখানে আমরা সাধারণ লিপিড থেকে কোষ তৈরি করেছি যার ভেতরেই ওষুধের কনাগুলো থাকে।
কম্পিউটার মডেলিং করে দেখা গেছে এই লিপিডগুলো যখনই পাকস্থলীতে পড়ে, সেখানে প্রাকৃতিকভাবেই একধরনের প্রতিরোধক তৈরি হয় যা অ্যাসিড অ্যাটাক থেকে ক্যাপসুলটিকে সুরক্ষা দেয়। আর ওর ভেতরে ওষুধগুলো সহজেই পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে-ক্ষুদ্রান্ত্রের দিকে যেতে পারে। তাতে এর কর্মক্ষমতা সামান্যও লোপ পায় না।
আর এই কোলেস্টোসামস যখন ক্ষুদ্রান্ত্রে পৌঁছায় শরীর সেগুলোকে গ্রহণ করার উপযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে। তখনই কোষগুলো অন্ত্র থেকে রক্তপ্রবাহে সঞ্চালিত হয়, আর রক্তের কোষগুলো সেটা গ্রহণ করে নিলে তা ভেঙ্গে যায়। যার মধ্য থেকে বের হয়ে আসে ইনসুলিন।
এরই মধ্যে ইঁদুরের শরীরে এই ইনসুলিন দিয়ে গবেষকরা দেখেছেন, কোলেস্টোসামস রক্তপ্রবাহের যে স্থানগুলোতে ইনসুলিন প্রয়োজন সেখানটাতেই ছুটে যায়। ফলে তা শরীরে দ্রুত কাজ করে।
সম্প্রতি ফিলাডেলফিয়ায় অামেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি (এসিএস)’র ২৫২তম জাতীয় সভা ও প্রদর্শনীতে এই গবেষণা ফল উপস্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ সময় ০৯৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৬
এমএমকে