ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

বিধিমালা মানতে আপত্তি মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট ব্যবসায়ীদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৬
বিধিমালা মানতে আপত্তি মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট ব্যবসায়ীদের

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আওতায় বিধিমালা মানতে আপত্তি মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট ব্যবসায়ীদের। এ বিধিমালার আওতায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালিয়ে অনুমোদনহীন মালামাল জব্দ করা শুরু করেছে অধিদপ্তর।

ঢাকা:ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আওতায় বিধিমালা মানতে আপত্তি মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট ব্যবসায়ীদের। এ বিধিমালার আওতায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালিয়ে অনুমোদনহীন মালামাল জব্দ করা শুরু করেছে অধিদপ্তর।

এই অভিযানের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) থেকে দেশের সকল মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট পালন করছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল ইন্সট্রুমেন্ট এন্ড হসপিটাল ইক্যুইপমেন্ট ডিলার্স এন্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের ব্যানারে এ ধর্মঘট চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মেডিকেলের সব যন্ত্রাংশ ওষুধ প্রশাসনের আওতায় নিয়ে আসতে চায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। আর এজন্য নতুন একটি বিধিমালা করা হয়েছে। ওষুধ আর মেডিকেল যন্ত্রাংশ একই বিধিমালায় এনে অযথাই ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হচ্ছে।

আর ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছে, মেডিকেল যন্ত্রাংশ নিয়ন্ত্রণ না করলে ভেজাল যন্ত্রাংশের কারণে রোগীর জীবন সংকটাপন্ন হতে পারে। ভেজাল প্রতিরোধ এবং দেশীয় কোম্পানির যন্ত্রাংশ বিক্রিকে উদ্ধুদ্ধ করতে বিধিমালা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) ভবনে মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট মার্কেটে বুধবার গিয়ে দেখা যায়, মার্কেটে সকল দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। মার্কেটের গেট বন্ধ করে বাইরে ধর্মঘট পালন সংক্রান্ত ব্যানার লাগানো হয়েছে।

ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর চাচ্ছে মেডিকেল সংশ্লিষ্ট সব কিছুই ওষুধ প্রশাসনের বিধিমালায় চলে আসুক। সবকিছু তো আর ওষুধ না। এজন্য ওষুধ প্রশাসন একটা বিধিমালা চালু করেছে, আর বিধিমালার আওতায় বিভিন্ন মার্কেটে যখন তখন অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দ করা হচ্ছে। এর ফলে আমরা বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছি।

গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে মিটফোর্ড আর বিএমএ মার্কেটসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালানো হয়েছে উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও রাজস্ব বোর্ড থেকে বিভিন্ন পোর্টে মেডিকেল মালামাল ছাড়পত্র না দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যার ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আমাদের প্রচুর পণ্য আটকা পড়ে আছে।

তিনি বলেন, আইন করতে হলে করবে, কিন্তু সেটা আমাদের সাথে কথা বলে। ওষুধ প্রশাসনকে আমরা বহুবার আলোচনার প্রস্তাব জানালেও তারা কোন সাড়া দেয়নি। আমাদের চার হাজারের মত প্রোডাক্ট রয়েছে। হুইল চেয়ার, স্ট্রেচারের মত প্রোডাক্টতো ওষুধ না। আমরা চাই উভয়পক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে এর একটা যৌক্তিক সমাধান।

তবে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ৬-৭ মাস ধরে ব্যবসায়ীদের সাথে অনেকবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই ব্যবসাকে একটা গাইডলাইনে নিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক মান অনুকরণ করে বিধিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে। ভেজাল যন্ত্রাংশ বিক্রি প্রতিরোধ ও দেশীয় যন্ত্রাংশ বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

সূত্র আরো জানায়, ইতোমধ্যে ১২৫টি পণ্যের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আরো ১৬৯টি পণ্যের অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন।

বিভিন্ন অভিযানের নেতৃত্বে থাকা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক সৈকত কুমার কর বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে অনেক ভেজাল মেডিকেল ডিভাইস রয়েছে, সে সব যদি কন্ট্রোল করা না হয় তাহলে যে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

‍এদিকে, মার্কেট বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বিএমএ মার্কেটে ডায়াবেটিকস মাপার যন্ত্র কিনতে এসেছেন নাদিম হাসান। এসে দেখেন মার্কেট বন্ধ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ডায়াবেটিকস প্রতিদিনই চেক করে ওষুধ খেতে হয়। আমার আজকেই দরকার ছিল, কিন্তু কিনতে আসলে মার্কেটের গেইট থেকেই বন্ধ বলে বিদায় করে দিল।

বাংলাদেশ মেডিকেল ইন্সট্রুমেন্ট এন্ড হসপিটাল ইক্যুইপমেন্ট ডিলার্স এন্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ জানায়, বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ওষুধ প্রশাসনের হয়রানি হতে মুক্তির দাবিতে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হবে। সেখানে সংগঠনের বিস্তারিত দাবি ও আগামী দিনের কর্মসূচি তুলে ধরা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৬
পিএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।