ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন আইন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
স্বাস্থ্য খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন আইন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিএমএ ও স্বাচিপ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চিকিৎসক ও রোগীর স্বার্থ নিশ্চিত করতে এবং স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে একটি নতুন আইন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান তিনি। এ সময় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় চিকিৎসক নেতারা গণমাধ্যম কর্মীদের দোষারোপ করেন।

বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় বুঝে হোক, না বুঝে হোক কোনো রোগী মারা গেলে তার স্বজনেরা চিকিৎসক ও সেবিকাদের ওপর আক্রমণ করেন এবং হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়ে ভাঙচুর করেন। এটা ঠিক নয়। আবার এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসকরাও ধর্মঘটের নামে রোগীদের জিম্মি করে পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থা বা সরকারের স্বাস্থ্য সেবাকে হুমকিতে ফেলে দেন। এটাও যৌক্তিক নয়।

এইসব সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) রয়েছে। উভয় পক্ষই আইন নিজেদের হাতে তুলে না নিয়ে সেখানে যেতে পারেন। এতে প্রকৃত বিচার সম্পন্ন হতে পারে।

নাসিম বলেন, আইন আছে। তারপরও এ ধরনের সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য নতুন আর একটি আইন তৈরি হচ্ছে। এতে রোগী এবং চিকিৎসক উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ হবে। এ আইনে কোনো চিকিৎসক যদি ইচ্ছা করে কোনো রোগীর অনিষ্ট করেন বা চিকিৎসক সমাজের ক্ষতি করেন। তাহলে তার জন্য সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

এ ধরনের সমস্যা বিএমডিসির মাধ্যমে সমাধান না হলে সমাজে এর প্রতিক্রিয়া খারাপ হবে উল্লেখ করেন মন্ত্রী বলেন, ২০১০ সাল পর্যন্ত বিএমডিসি অকার্যকর সংস্থা ছিলো। এখন সংস্থাটিকে কার্যকর করা হয়েছে। সেখানে দোষীদের শাস্তিও দেওয়া হচ্ছে।

বিএমডিসির সদস্য অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত ১৫ জন চিকিৎসককে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএমডিসি’র ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার না থাকায় চিকিৎসকদের লাইসেন্স বাতিল করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রয়োজনে আইন করে বিএমডিসির ক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে।

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশনের জন্য গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসা ভুল ছিলো কিনা তা বলার দায়িত্ব না নিয়ে, সেজন্য বিশেষজ্ঞদের প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে গণমাধ্যমকে।

এ সময় বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক কাজী শহিদুল আলম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কোনো রোগীই চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মারা যায় না। কিন্তু গণমাধ্যমের খবর পড়লে মনে হয় আয়ু থাকতেই রোগীকে মেরে ফেলা হয়েছে। অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাংবাদিক জিয়া ইসলামের মাথার খুলি রেখে দেওয়ার পক্ষেও সাফাই গান তিনি।

বিএমএ’র এই নেতা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গণমাধ্যমকে আক্রমণ করে বলেন, সাংবাদিকরা না বুঝেই চিকিৎসকদের বিপদে ফেলতে এবং উত্তেজনা সৃষ্টি করতে এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করেন।

এ সময় গণমাধ্যম কর্মীরা ভুল চিকিৎসা সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে দ্রুত সংবাদ সম্মেলন শেষ করে দেন। তিনি বলেন, এইসব সমস্যা সমাধানের জন্যই নতুন আইন হচ্ছে। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
আরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।