ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঈদের ছুটিতে চরম দুর্ভোগ শিশু হাসপাতালে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৬ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৭
ঈদের ছুটিতে চরম দুর্ভোগ শিশু হাসপাতালে বিপাকে শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা/ছবি: ঊর্মি

ঢাকা: ঈদের আগের দিন হুট করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ৯ মাস বয়সী আয়ান। ছেলেকে নিয়ে মা ছোটেন রাজধানীর আগারগাঁও ঢাকা শিশু হাসপাতালে। একদিকে বমি অন্যদিকে পাতলা পায়খানা। কিন্তু প্রথম তিন ঘণ্টা কোনো ডাক্তারই এলেন না। পরে এলেন এক ইন্টার্ন ডাক্তার। বললেন জরুরি রক্ত পরীক্ষা করাতে। রক্তও নেওয়া হলো। সে দিন পার হয়ে পরেরদিনও মেলেনি তার রিপোর্ট।

ঈদের পরদিন মঙ্গলবার (২৭ জুন) ঢাকা শিশু হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি জানা যায়। শিশুটির মা মাকসুদা আফরোজ চৌধুরী ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল ও ডাক্তারদের অবস্থা সম্পর্কে এভাবেই জানাচ্ছিলেন বাংলানিউজকে।

শুধু তাই নয়, ঈদের আগের দিন থেকে ঈদের দিন দুপুর পর্যন্ত কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আয়ানকে দেখতে আসেননি বলে জানান আয়ানের মা। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দেখা না পেয়ে ঈদের দিন দুপুরে আয়ানকে অন্য  হাসপাতালে নেন। এখন রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য শিশু হাসপাতালের চক্কর কাটছেন।

বিপাকে শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাঈদের পরদিন সকাল থেকেই আগারগাঁও শিশু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রোগীদের ভিড় দেখা যায়। জরুরি বিভাগে রয়েছেন দু’জন ডাক্তার। রাজধানীর বাড্ডা থেকে আসা ইকবাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এতোদ‍ূর থেকে এসেছি রাস্তায় টেনশন করতে করতে। এসে শুনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে হলে বুধবার থেকে আসতে হবে।

সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন যারা রোগী নিয়ে এসেছেন রাজধানীর বাইরে থেকে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে যশোরের মণিরামপুর থেকে আসা এক রোগীর অভিভাবক বলেন, ছেলেটা অসুস্থ হওয়ায় গত শুক্রবার ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় আনলাম। কোনো লাভ হলো না। শুনলাম, ঈদের ছুটি শেষে ডাক্তার আসবেন। বাড়ি যাওয়ার টিকিট পাইনি। এখানেই ঈদ করলাম। অনেকেই বলছেন, ডাক্তাররা নাকি সামনে সপ্তাহের আগেও আসবেন না।

সন্তানকে ভর্তির জন্য কেবিন চাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শাহীন আহমেদ। বলেন, আমার মেয়ে আনিশার বয়স তিন বছর। খুব জ্বর আর পাতলা পায়খানা। খুব খারাপ অবস্থা। ভর্তি করতে হবে। এসি কেবিন চাইলাম। এখানকার লোকজন বললেন নেই, আমি ওপরে নিজে গিয়ে দেখলাম বেশ কয়েকটা এসি কেবিন ফাঁকা। তাও তারা দিচ্ছিলো না। পরে যখন তাদের লোকজনকে গিয়ে অনুরোধ করলাম তখন একটা কেবিনতো দিলেন কিন্তু এতো নোংরা কি বলব!

‘রুমের ফ্লোরে, জানালার কাছে আবর্জনা পড়ে রয়েছে। সুস্থ মানুষও এখানে থাকলে অসুস্থ হয়ে যাবে। অন্য হাসপাতালে যাবো যখন বললাম, তখন কেবিনের জন্য অ্যাডভান্স যে টাকা দিয়েছি তা ফেরত দিতেও গড়িমসি করছেন। ’

এসব বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগে চেষ্টা করা হলে কাউকেই পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, সবাই ঈদের ছুটিতে আছেন। আর যে দু’একজন ডিউটিতে রয়েছেনও তারাও আসবেন দুপুরের পরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৭
ইউএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।