ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ভেলোরে থাকা ও খাবারে বিলাসিতা না করাই শ্রেয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৭
ভেলোরে থাকা ও খাবারে বিলাসিতা না করাই শ্রেয় ভেলোরে রাস্তার পাশে লজ ও হোটেল। ছবি: বাংলানিউজ

ভেলোর থেকে:  চিকিৎসা করাতে সিএমসি তো এলেন। এবার, কাজ হলো ক'দিনের জন্য একটা মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করা। কারণ, বেশ ক’টি দিন  কাটাতে হবে এই শহরে। আর এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হলেও সময় লাগে বেশ।    

যদি আপনি প্রথম এ শহরে আসেন, তাহলে জার্নির ধকল সামলে রোগী নিয়ে প্রথমদিন হোটেল বা লজ খুঁজে অযথা কষ্ট না করাই ভালো। প্রথম দিন একটু বেশি রুপী লাগলেও একটা ভালো হোটেলে উঠে পড়ুন।

ফ্রেশ হয়ে খোঁজ খবর নিন কোনটা আপনার জন্য সুবিধাজনক লজ বা হোটেল। যেখানে কাটাতে পারেন রোগীকে নিয়ে বাকি দিন গুলো।

কমপক্ষে তিন দিনের জন্য রুম রেন্ট নেয় এখানকার হোটেল বা লজগুলো। তবে একদিন থাকলে বাকী টাকা ফেরত পাবেন নি:সন্দেহে।     

সিএমসি হাসপাতালকে কেন্দ্র করে একাধিক হোটেল ও লজ আছে। লজগুলোর  ভাড়া দেড়শ’ থেকে ৩শ’ রুপির মত পড়ে।   নন এসি হোটেলগুলোতে ৫শ’ রুপি থেকে ৭শ’ রুপির মধ্যে রুম পাওয়া যায়। এসি রুমের ভাড়া পড়ে হাজার থেকে ১৫শ’ রুপি। সুবিধা অনুযায়ী বেছে নিন একটা। সাথে থাকে রান্না করার ব্যবস্থাও। তবে এ জন্য বাড়তি রুপি খরচ করতে হবে।

হোটেল  ম্যানেজারকে ১শ’ রুপির সঙ্গে রোগী ও সঙ্গে আসা আত্মীয়ের পাসপোর্টের ফটোকপি ও একটা পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দিন। আধঘণ্টা বাদে মাথাপিছু পাবেন একটি করে 'সি ফর্ম'। ভেলোরে রাস্তার পাশে খাবার দোকান।  ছবি: বাংলানিউজ

এরপর পাসপোর্ট, সি ফর্ম, হোটেলের একটি ভিজিটিং কার্ড নিয়ে যেতে হবে পুলিশ স্টেশনে। থানা জমা নেবে আপনার সি ফর্ম। আর হোটেল ভিজিটিং কার্ডটিতে একটি স্ট্যাম্প দিয়ে দেবে আপনাকে। নেবে ২০ রুপি। এ পর্বটিকে হ্যাপা মনে হলেও সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বলয়ে চলে গেলেন আপনি। কারণ আপনি বিদেশি। এসব মিটলে ধাপে ধাপে শুরু হবে চিকিৎসা।

দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের আবহাওয়া, ভাষা আর খাবার কোনোটাই সুবিধার মনে হবে না বাঙালিদের কাছে। তবে খাবারের ব্যবস্থা ঠিক মতো করতে না পারলে রোগীর সঙ্গে স্বজনেরও রোগীতে পরিণত হতে সময় লাগবে না।

তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বুঝে বুঝে করলে স্বজনসহ রোগী সুস্থই থাকবেন। এখানকার মানুষদের রুক্ষ মনে হলেও, তারা খুবই হেল্পফুল। তবে গায়ে পড়ে সহযোগিতা করে না। আপনার প্রয়োজন যতটুকু ততটুকুই পাবেন। প্রফেশনাল হওয়ায় বেশি কথা বলা এরা পছন্দ করে না। ভাষা তামিল হলেও হিন্দি জানা থাকলে যোগাযোগাটা চালিয়ে নিতে খুব সমস্যা হবে না।

অাগস্ট মাসের ৩৬ ডিগ্রি গরমে তামিলনাড়ুর মশলাযুক্ত খাবার বাঙালিদের টানবে না মোটেও। কিন্তু  সিএমসির আশপাশে কিছু বাঙালি রেস্তোরাঁ মিললেও তাদের রান্নাতেও তামিল ছোঁয়া লেগেছে। তবে রসনাবোধ থেকে একটু স্বাদ গ্রহণ করতেই পারেন। জেনে রাখুন, রেস্তোরাঁগুলোতে অধিকাংশ খাবারই ওজনে বিক্রি হয় ভেলোরে। ভেলোরে রান্না করে খেতে চাইলে।  ছবি: বাংলানিউজ

অতএব হোটেল ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করুণ। তারা হয় রান্নার সরঞ্জাম ব্যবস্থা করে দেবে, নয় তো জায়গা বলে দেবে। এক সেট হাঁড়ি-পাতিল-প্লেট ও গ্যাসের সিলিন্ডারসহ চুলার দৈনিক ভাড়া ১৭ থেকে ২০ রুপি। সিলিন্ডারে গ্যাস খরচ প্রতি কেজি ১২০ রুপি। ৩ জনের রান্না হলে ১ কেজি গ্যাসে ৬/৭ দিন চলে যাবে। খাওয়ার পানি ৫ লিটারের জার ৬৫ রুপি।   দোকানে বানানো কফি ও চা খুবই সুস্বাদু। তবে লজ বাদে অধিকাংশ হোটেলে আমিষ রান্নার অনুমতি নেই। তাতে কি? চিকিৎসা করাতে এসেছেন। বেশী বেশী আমিষ খেয়ে অযথা রুপি খরচ না করাই ভালো। আর এখানে স্থানীয় আবহাওয়া অনুযায়ী নিরামিষ পদ স্বাস্থ্যসম্মত। এছাড়া ফরমালিনবিহীন ফল খুবই সুস্বাদু।

আরো জেনে রাখা ভালো, কারেন্সি এক্সচেঞ্জ করার সুবিধা কলকাতার মতো এখান নেই। এখানে কারেন্সি এক্সচেঞ্জ করতে হলে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে করতে হবে। তাও সব ব্যাঙ্ক করে না। অতএব মানি এক্সচেঞ্জের জরুরি কাজটি কলকাতায় সেরে আসাই ভালো।

শহর অনুযায়ী নিজেকে মানিয়ে নিতে সাময়িক অসুবিধা হলেও, মনে রাখবেন, ভারতের শ্রেষ্ঠ জায়গায় চিকিৎসা সেবা নিতে এসেছেন। তাই থাকা ও খাবারে বেশী বিলাসিতা না করাই ভালো।

যে ভাবে যেতে পারেন ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৭
ভিএস/ এমসি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।