সিঙ্গাপুর: ধুমপানের নানা খারাপ দিক সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি অবহিত। ধুমপানের কারণে ক্যান্সার হয় বা চুল পড়ে যায় এধরনের তথ্য আমরা হরহামেশাই শুনতে পাই বিভিন্ন ফোরামে।
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, সিঙ্গাপুরের ৫৭ দশমিক পাঁচ শতাংশ ধুমপায়ী ধুমপানের কারণে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন এমন বিষয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞ।
সিঙ্গাপুরের স্থানীয় চিকিৎসক এবং গবেষকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিমের এই গবেষণায় ১৪ থেকে ৮৩ বছর বয়সী ২০০ জন ধুমপায়ীর মধ্যে এ জরিপ চালানো হয়।
তবে জরিপের আওতায় আসা ওই ধুমপায়ীদের মধ্যে দৃষ্টিহীনতা বা অন্ধত্বের বিষয়ে জানেন বা উদ্বেগ রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা প্রতি দশ জনে চার জন।
গবেষণায় দেখা যায় যে, ধুমপান সরাসরি ‘এইজ রিলেটেড ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের’ (এএমডি - এক প্রকার চোখের রোগ) সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। দশজন ধুমপায়ীর মধ্যে অন্তত পাঁচ জনই এই রোগে আক্রান্ত।
এছাড়াও ধুমপানের কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ধুমপায়ীদের ভেতর ৭০ শতাংশ মানুষই এ বিষয়েও জানেন না বা জেনেও মানেন না।
তবে গবেষকরা এও দেখেছেন যে, দৃষ্টিহীনতা বা অন্ধত্বকে ভয় পেয়ে অনেকেই ধুমপান ছেড়ে দিয়েছেন। ধুমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে অন্ধত্বের ভয় সিঙ্গাপুরে দ্বিতীয় প্রধান কারণ। প্রথমে রয়েছে ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার ভয়।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ধুমপানের কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে যায় এবং অপরিণত বয়সেই চোখে বিভিন্ন রোগ বাসা বাধতে থাকে।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এখনই জনসচেতনতা তৈরি ওপর জোর দেন গবেষকরা।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. অ্যামি খর বলেন, বিশ্বব্যপী তিন কোটির বেশি মানুষ এএমডি-তে আক্রান্ত। আগামী ২৫ বছরের মধ্যে এই পরিসংখ্যান তিনগুন বেড়ে যাবে। এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এখনই জনসচেতনতা বাড়ানো উচিত বলে মত দেন তিনিও।
গবেষকরা বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ধুমপান ছেড়ে এই রোগ হতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তবে এর পাশাপাশি পুষ্টিকর সবজি এবং ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১১