এমনটাই বলছিলেন বাংলাদেশের হেলথ ট্যুরিজমের সবচেয়ে বড় সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান জিডি অ্যাসিস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মঈনউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, হেলথ ট্যুরিজমে ভিন্নধর্মী ফিচার নিয়ে হাজির হয়েছে জিডি অ্যাসিস্ট, যা কারো কারো ভাবনার মধ্যেও ছিল না আগে।
কিন্তু জিডি অ্যাসিস্ট পুরোপুরি ভিন্ন ধাঁচের, মালয়েশিয়ায় প্রায় ৭০টি হাসপাতাল, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের বেশ কিছু নামিদামি হাসপাতালের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। রোগের ধরন ও রোগীর পছন্দ অনুযায়ী ডাক্তার ও হাসপাতারের বন্দোবস্তও করে দিচ্ছে। জানান তিনি।
সৈয়দ মঈনউদ্দিন বলেন, অবাক করা বিষয় হচ্ছে এর জন্য কোনো চার্জ আদায় করা হয় না রোগীর কাছ থেকে। অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন, সহায়তা ফ্রি দিচ্ছে। কিন্তু অন্যদিক দিয়ে ঠিকই উসুল করে নেবে। আপনার হাসপাতালের নির্ধারিত চার্জের থেকেও অনেক কম খরচে একই সেবা পাওয়া যাবে ডিজি অ্যাসিস্ট থেকে।
দেশীয় এ কোম্পানিটির সঙ্গে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার নামিদামি সব হাসপাতালের সঙ্গে রয়েছে করপোরেট চুক্তি। সেই চুক্তির আওতায় নির্দিষ্ট ছাড়ের সুবিধা পাচ্ছেন রোগীরা। শুধু ডাক্তার কিংবা হাসপাতালের সেবাতেই সীমাবদ্ধ নেই প্রতিষ্ঠানটি।
বিদেশে যেতে হলে এয়ারলাইন্স থেকে শুরু করে এয়ারপোর্টে যাতায়াত, হোটেল, খাবার-দাবার ও ভিসাসহ সব ব্যবস্থাই রয়েছে তাদের। অনেকে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে মালয়েশিয়া যেতে পারেন না। তাদের জন্য সুখবর দিচ্ছে জিডি অ্যাসিস্ট। মাত্র দু’দিনে ভিসার নিশ্চয়তা দিচ্ছে দারা। আর কাজটি সম্ভব হয়েছে মালয়েশিয়া অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সনদ পাওয়ায়। বাংলাদেশে মেডিকেল ভিসার একমাত্র অথরাইজড প্রতিষ্ঠান জিডি অ্যাসিস্ট।
এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গেও প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে বিশেষ চুক্তি। সরাসরি টিকিট কিনতে গেলে যে দর তার চেয়ে অনেক কম দরে টিকিট নিশ্চিত করে দিয়েছে দেশীয় এ প্রতিষ্ঠানটি। আর এসব সার্ভিস ফ্রিতে দিচ্ছে জিডি অ্যাসিস্ট।
প্রশ্ন ছিল জিডি অ্যাসিস্ট কতোদিন এভাবে ফ্রি সহায়তা দেবে? আর কোম্পানির আর্থিক দিক বিবেচনায় কতটা বাস্তবসম্মত? জবাবে সৈয়দ মঈনউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান জিডি অ্যাসিস্ট। গ্রিন ডেল্টা একে কোম্পানির মার্কেটিং হিসেবে দেখছে। সে কারণে এতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। তবে হ্যাঁ হাসপাতালগুলোর সঙ্গে করপোরেট চুক্তির আওতায় সীমিত হারে কমিশন পায়। তবে সেটি কোনোভাবেই রোগীর উপর বর্তায় না। বরং রোগী সরাসরি গেলে যে চার্জ দিতে হবে তার চেয়ে অনেক কম খরচ পড়বে। কারণ আমাদের সঙ্গে তাদের করপোরেট চুক্তি রয়েছে।
আমাদের দেশের লোকজন ভারত, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরমুখী। সিঙ্গাপুরের নামিদামি হাসপাতালের সঙ্গে তুলনা করলে, একই মানের সেবা মালয়েশিয়ায় এক-তৃতীয়াংশ খরচে পাওয়া সম্ভব। অনেকে বিষয়টি জানেই না- মন্তব্য করেন জিডি অ্যাসিস্ট এমডি।
সৈয়দ মঈনউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ভিন্নধর্মী সেবার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের রয়েছে ‘সেকেন্ড মেডিকেল ওপেনিয়ন’ সেবা। এতে যুক্ত রয়েছে আমেরিকার ৬০টি হাসাপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।
আমাদের কাছে রিপোর্ট নিয়ে এলে সেগুলো পাঠিয়ে দিচ্ছে আমেরিকার ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। এখানে সুযোগ রয়েছে টেলিকনফারেন্সেরও। এমনকি কোনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কেউ যদি মনে করেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলবেন, তাও সম্ভব। আমরা হাসাপাতালে গিয়ে রোগীর সঙ্গে যুক্ত করে দিচ্ছি।
ক্যানসার রোগীদের জন্য প্রত্যেক শনিবার টেলিকনসালটেশন করা হচ্ছে জানিয়ে বলেন, এতে যুক্ত হচ্ছেন ভারতের দেশখ্যাত অনেক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ। শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে ‘হেলথ্ কানেক্ট কার্ড’। এই কার্ডধারীরা ডাক্তার, হাসাপাতাল, ফার্মেসিতে পাবেন বিশেষ ডিসকাউন্ট। সঙ্গে থাকবে স্বাস্থ্যবিমা। যা দেশে ও দেশের বাইরেও প্রযোজ্য হবে।
এছাড়া নতুন করে নিয়ে আসছে ‘প্রিভেন্টিং হেলথ কেয়ার’ নামে নতুন মোবাইল অ্যাপস। এতে হেলথ কন্ডিশন, খাদ্যভাস, ব্যবস্থাপত্র, ওষুধ খাওয়ার সময় রেকর্ড করে রাখা যাবে। অ্যাপসটি স্বংক্রিয়ভাবে বার্তা পাঠাবে। এই অ্যাপস ব্যাবহারকারীও পাবেন বিশেষ ডিসকাউন্ট।
প্রশ্ন ছিল অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কেনো জিডি অ্যাসিস্টের কাছে জনগণ আসবে? জবাবে সৈয়দ মঈনউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাইট ট্রিটমেন্ট, রাইট ডাক্তারের জন্য আমাদের কাছে আসতে হবে। আমাদের রয়েছে প্রফেশনাল টিম, যা অনেকের ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত। আমাদের কর্মকর্তা থেকে কর্মচারী পর্যন্ত প্রত্যেকের রয়েছে জবাবদিহিতা। আমরা ভ্রমণটাকে টেনশনমুক্ত আনন্দদায়ক করি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৭
এসআই/এএ