ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সিলিকোসিস ঝুঁকিতে হাজারও শ্রমিক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৮
সিলিকোসিস ঝুঁকিতে হাজারও শ্রমিক পাথর ভাঙা মেশিনের ধূলোর মধ্যেই কাজ করছে শ্রমিকরা-ছবি-বাংলানিউজ

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে পাথর ভাঙা মেশিনের ধূলোয় স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকলেও তাতে নেই কোনো ধরনের সচেতনতা। এতে প্রতিদিন প্রাণঘাতী ব্যাধি সিলিকোসিস ঝুঁকিতে পড়ছেন জেলার হাজারও শ্রমিক।

বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ে পাথর শিল্পে কাজ করা মালিক-শ্রমিক কেউই স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন না হওয়ায় প্রাণঘাতী ব্যাধি সিলিকোসিসসহ ভয়াবহ রোগ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন শ্রমিকরা।  

জেলায় শ্রমিকদের একটি বড় অংশ পাথর ভাঙার কাজে যুক্ত।

পাথর শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছেন তেঁতুলিয়া উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। এমন অনেকেই আছেন যাদের জীবিকার পুরোটাই পাথরের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু পাথর উত্তোলন ও ভাঙার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ ও পরিকল্পনা না থাকায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন পাথর শ্রমিকদের বিরাট অংশ।  

সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর, সিপাইপাড়া, তিরনই, খয়খেটপাড়া, সর্দারপাড়া, তেঁতুলিয়া, শালবাহান, বুড়াবুড়ীর বালাবাড়ী, ভজনপুর, দেবনগর, জগদল, গোয়ালঝাড়, ময়নাকুড়ি এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে কয়েক হাজার পাথর ক্রাশিং মেশিনে সারা বছর পাথর ভাঙা হয়।  

পাথর ভাঙা মেশিনের ধূলোর মধ্যেই কাজ করছে শ্রমিকরা-ছবি-বাংলানিউজএছাড়া মাটি খনন করে উত্তোলন করা হয় পাথর। আবার ভারত থেকেও আমদানি করা হয় পাথর। মেশিনের মাধ্যমে এসব পাথর ভাঙার সময় যে গুড়া ও ধূলো নির্গত হয় তা চারপাশে ছেয়ে যায়। কিন্তু ধূলোর মধ্যেও মুখে মাক্স না লাগিয়ে কাজ করতে দেখা যায় শ্রমিকদের।  

জানা যায়, এদের অনেকেই নানা রোগ ব্যাধিতে ভুগছেন। অন্য কোনো কাজ না পাওয়ায় জীবিকার তাগিদে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েই প্রতিনিয়ত পাথর ভাঙার কাজ করছেন এসব শ্রমিকরা। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাথর ভাঙা মেশিনের উচ্চ শব্দ আর ধূলা-বালুর মধ্যে কাজ করতে হয় তাদের। রাতে মাথা ব্যথা ও নিদ্রাহীনতায় ভোগেন অধিকাংশ শ্রমিক। পাথর থেকে উৎপন্ন এসব ধূলা শ্রমিকদের নাক ও মুখ দিয়ে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে। শ্রমিকদের অনেকেই দীর্ঘদিন কাজ করার পর শ্বাসকষ্ট, সর্দি-জ্বরসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হলেও মালিকদের পক্ষ থেকে কোনো সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।  

সংসার চালাতে ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হয় বলে জানান শ্রমিকরা। এখনি কার্যকরী ব্যবস্থা না নিলে শ্রমিকদের এই বিরাট অংশ সিলিকোসিসসহ ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে তেতুঁলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিন বাংলানিউজকে জানান, প্রাণঘাতী ব্যাধি সিলিকোসিস থেকে শ্রমিকদের নিরাপদ থাকার জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালাসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।