তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনীটি শুরু হয়েছিল বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি)।
আয়োজকদের মতে, ওষুধ প্রস্তুতকারকদের জন্য আয়োজিত এবারের এই প্রদর্শনীতে প্রায় ৫০টির অধিক বিদেশিসহ ৬৭০টি কোম্পানি অংশ নেয়।
শনিবার (০২ জানুয়ারি) এক্সপোটির শেষ দিনে দেখা যায়, সবকিছু গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত অংশগ্রহণকারীরা। তবে এক্সপোটি আরও দীর্ঘায়িত হলে ভালো হতো বলে মন্তব্য দর্শনার্থীদের। কেননা, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার এক্সপোটির পরিস্থিতি ছিল আরও আকর্ষণীয়।
এক্সপোটির প্রথম গেট দিয়ে ঢুকেই দেখা গেছে, এসিজি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্যাভিলিয়নে দর্শনার্থীদের ভিড়। এই প্যাভিলিয়নে দেখানো হচ্ছে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ৫ডি (5D) ভিডিও। এই ভিডিওতে রয়েছে, এই কোম্পানিটির মেশিনে কীভাবে একটি ক্যাপসুল প্রস্তুত করা হয়।
এ বিষয়ে কোম্পানির প্রকৌশলী গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, ভিডিওটি দেখার জন্য চোখে ভিআর (ভার্চুয়াল রিয়েলিটি) পরতে হয়। এটা দেখলে মনে হবে, আপনি বা ক্যামেরাটি ক্যাপসুলের ভেতরে সেট করা। সুন্দরভাবে বোঝানোর জন্য যে সিটে বসে মানুষ ভিডিওটি দেখছে, সেটা নড়াচড়া বা রকিং চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে।
দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইনও দেখা গেছে সেখানে। তেমনই একজন অরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসে কর্মরত সেলিনা খান বাংলানিউজকে বলেন, ভিডিওটা বেশ দারুণ। মনে হবে ক্যাপসুলের ভেতরে আছেন আপনি। আর ক্যাপসুলের নড়াচড়ায় চেয়ারটাও নড়ে বলে বেশ অ্যাডভেঞ্চার অনুভূত হয়।
এদিকে, এই কোম্পানির অত্যাধুনিক অন্যান্য সব পণ্যও প্রদর্শন করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোম্পানিটির সেলস ম্যানেজার ফরিদ আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ বানাতে প্রয়োজন টেম্পার এভিডেন্ট মেশিন।
বাংলাদেশের এই প্রদর্শনীতে প্রথমবার এসে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চীনের হুংসিসিংজিং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সেলস ম্যানেজার ঝিয়াং হৌ। তিনি বলেন, আমরা আমাদের টার্গেট পূরণ করতে পেরেছি।
আবার এক্সপোটিতে দুপুরের পর থেকেই অনেক স্টলের প্রতিনিধিদের গুছিয়ে নিতে দেখা গেছে। আগামীবার এক্সপোটিতে অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশনের কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে তাদের। যা এখন থেকেই চলমান রয়েছে। এছাড়া আগত দর্শনার্থীরাও এক্সপোটি থেকে উপকৃত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।
তেমনই একজন দেশের একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে কর্মরত ফার্মাসিস্ট হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কোম্পানির যে চাহিদা ছিল, সে অনুসারে আমরা এখানে সব পেয়েছি। বরং আরও বেশি পেয়েছি। এক্সপোটির এবারের আয়োজন গতবারের থেকে বেশি ভালো ছিল।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের চেয়ে সস্তায় মানসম্মত ওষুধ আর কোনো দেশ দিতে পারে না। ওষুধ রফতানিতে আমাদের সাফল্য অনেক। সেই সাফল্যের ধারার প্রমাণ এই এক্সপো। আগে ছোট আকারে এই এক্সপোর আয়োজন হতো। এখন এক্সপোর আকার এবং বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণেই প্রমাণ হলো আমাদের সফলতা। আরেকটি বিষয় হলো- আমাদের প্রায় ৮০০ নতুন প্রোডাক্ট বেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। কিন্তু বাজারে আসে নাই। আমাদের একটাই সমস্যা, তা হলো- ওষুধ কোম্পানিগুলোর ক্যাপাসিটি।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৯
এমএএম/টিএ