মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক একথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে চিকিৎসকের ঘাটতি মেটাতে এ বছরের মধ্যে আরও ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হবে। চিকিৎসকরা যেন উপজেলায় থাকেন সেজন্য প্রত্যেক উপজেলায় গাড়ি দেওয়া হবে।
চিকিৎসা শিক্ষার মানন্নোয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে বেসরকারি পর্যায়ে যেসব চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলো তেমন মানসম্পন্ন নয়। সেগুলোর মানন্নোয়ন করতে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে উন্নত ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা করা হবে। বর্তমানে বিদ্যমান ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত দুর্বল। সারাদেশের যেসব ডাক্তারদের পদোন্নতি বাকি রয়েছে সেগুলো প্রদান করা হবে। পাশপাশি সারাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিসের আওতায় আনতে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলনের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন-জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, বিএমএ'র মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান বলেন, দেশের অন্য যেকোন পেশার মানুষের চেয়ে ডাক্তারদের বেশি মানবিক হতে হবে। দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করতে হবে। সরকারি চাকরি করতে হলে কর্মস্থলে থাকতে হবে। প্রশাসনে বা অন্য যেকোন পেশায় ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি দিয়ে দায়িত্ব পালন করানো যায়, কিন্তু চিকিৎসকের কাজ ভারপ্রাপ্ত দিয়ে করানো সম্ভব না। তাই বিষয়টি মাথায় রেখে সেভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চিকিৎসকদের আবাসন সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেখানে মানসম্পন্ন আবাসন তৈরি করা হবে এবং সেখানে থাকতে চিকিৎসকদের কোনো ভাড়া দিতে হবে না। এছাড়া চিকিৎসকদের সুরক্ষায় অচিরেই চিকিৎসা সুরক্ষা আইন চূড়ান্ত করা হবে।
জেলা-উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, আমরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পরিদর্শনে আসবো। কখনও জানতে পারবেন, কখনও জানতে পারবেন না। তাই সাবধান হয়ে যান। পরিদর্শনে কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এসময় অন্যান্য বক্তারা দাবি উপস্থাপন করে বলেন, কর্মস্থলে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি বিব্রতকর। তবে এ সমস্যা সমাধানে বিগত পাঁচ বছরে মন্ত্রণালয়ে একটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়নি। চিকিৎসা পেশার মানন্নোয়নে কর্মস্থলের নিরাপত্তা বাড়ানো, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য কমানো এবং সঠিক উপযুক্ত ক্যারিয়ার প্ল্যান তৈরি করতে হবে। অনারারি চিকিৎসকদের মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
এমএএম/আরআর