ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি আওব নেফ্রোলজির মতে, বর্তমানে এটি বিশ্বে ১১তম মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। প্রতিবছর বিশ্বে ১.২ মিলিয়ন লোক ক্রনিক কিডনি রোগের কারণে মৃত্যুবরণ করে।
এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে আরও সচেতন করতে রাজধানীর মিরপুরের কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং রিসার্চ ইনস্টিটিউটে সম্পন্ন হয়েছে একটি বৈজ্ঞানিক সেমিনার।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালের হল রুমে দিনব্যাপী চিকিৎসকদের জন্য আয়োজিত এ সেমিনারে তুলে ধরা হয় এ বিষয়ক বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ তথ্য। ‘ডায়াবেটিক কিডনি রোগ এবং রেনাল প্রতিস্থাপনে মৃত্যু বিষয়ক আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সেমিনার’ শীর্ষক সম্মেলনে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফেরদৌস রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অধ্যাপক একে আজাদ খান, কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুণ অর রশীদ, সধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুহিবুর রহমানসহ দেশি-বিদশি কিডনি বিষয়ক বিভিন্ন চিকিৎসকরা।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, দুই মিলিয়ন মানুষ কিডনি প্রতিস্থাপন এবং ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে। এর বেশির ভাগই হচ্ছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে। অন্যদিকে, গরিব দেশগুলো যেমন- প্রায় ১০০টি দেশে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে না পেরে কিংবা চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে রোগী। এ কারণে আমাদের এই রোগের ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়িয়ে এর প্রতিরোধের দিকে বেশি নজর বাড়াতে হবে।
কিডনি রোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিস্থিতির বিবরণ দিতে গিয়ে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ১৮ মিলিয়ন কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল। আমাদের দেশে এর কারণ হলো ক্রনিক নেফ্রিটিসে ৪০ শতাংশ, ডায়াবেটিসের কারণে ৩৪ শতাংশ এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণে ১৫ শতাংশ। দেশে বর্তমানে ০.৮০ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগী এবং ২০ মিলিয়ন উচ্চ রক্তচাপ রোগী রয়েছে। তাছাড়া ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর ৪০ থেকে ৮০ শতাংশ আবার ৫ থেকে ১৫ বছর ভোগার পর উচ্চ রক্তচাপের কবলে পড়ে। আর এসব রোগ কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করে। এ ধরনের ৪০ শতাংশ রোগী মারা যায়। আবার শুধু উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীরাও কিডনির রোগে পর্যবসিত হয়।
এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের করণীয় কী? সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশের প্রাইমারি স্বাস্থ্যসেবা গ্রামাঞ্চলে এবং সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি স্বাস্থ্যসেবা শহরাঞ্চলে প্রচলিত আছে। এখানে এসব রোগ প্রতিরোধের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আছে। মানুষকে নিজ দায়িত্বে সেগুলো জানতে হবে। প্রযুক্তির কল্যাণে অনেকেই জানে, কিন্তু মানে না। আমাদের মানার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আর চিকিৎসককেও এ ব্যাপারে নিজ দায়িত্বে মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বালাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
এমএএম/টিএ