মঙ্গলবার (২৮ মে) সচিবালয়ে ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
অনেক বেসরকারি হাসপাতালে গর্ভবতী নারীকে সিজারে বাধ্য করার বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমরা কখনো চাইবো না যে অন্যায় করে পার পেয়ে যাক।
‘আগামীতে আপনারা অবশ্যই লক্ষ্য করবেন, এর পরিবর্তন হচ্ছে। কিছু কিছু অ্যাকশন সব জায়গায় শুরু হয়েছে। আগামীতে আরো অ্যাকশন হবে। যেখানে অন্যায় দেখতে পাবো। ’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না আমাদের মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে, শিশুস্বাস্থ্য নিয়ে কেউ ব্যবসা করুক কেউ ছিনিমিনি করুক- এ জিনিসটা আমরা কখনো বরদাস্ত করবো না। যা যেখানে দেখি আমরা ব্যবস্থা নেবো।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাতৃস্বাস্থ্য সম্পর্কে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও মাতৃমৃত্যু রোধে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবছর ২৮ মে ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’ পালনের ঘোষণা দেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারেও যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালিত হচ্ছে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘মর্যাদা ও অধিকার, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসূতি সেবায় অঙ্গীকার’।
সরকার মাতৃমৃত্যু হার কমানোর লক্ষ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রসূতি মায়েদের নিরাপদ ও জরুরি সেবায় আনার লক্ষ্যে প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৫৯টি জেলা হাসপাতাল, ৬৮টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং ১৩২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরি প্রসূতি সেবা কার্যক্রম চালু করেছে। বাড়িতে নিরাপদ প্রসব সম্পন্ন করা, গর্ভকালীন জটিলতা নিরূপণ ও জরুরি প্রয়োজনে উচ্চতর হাসপাতালে রেফার করার লক্ষ্যে কমিউনিটি পর্যায়ে সিএসবিএ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এ পর্যন্ত ১১ হাজার ২৫৭ জন নারী মাঠকর্মী ও প্রাইভেট শিক্ষার্থী সিএসবিএ কোর্স সম্পন্ন করে কমিউনিটি পর্যায়ে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ৩ হাজার মিডওয়াইফ তৈরির লক্ষ্যে মিডওয়াইফারী কোর্স চালু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬শ নার্স ৬ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে সার্টিফায়েড মিডওয়াইফ এর সনদ পেয়েছেন। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। এছাড়াও ৩ হাজার ৫৪৪ জন ৩ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা মিডওয়াইফারী কোর্স সম্পন্ন করেছেন। এরমধ্যে ১ হাজার ১৮৩ জনকে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পদায়ন করা হয়েছে। এর ফলে প্রাতিষ্ঠানিক ও নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মাতৃমৃত্যু হার কমানোর লক্ষ্য সামনে রেখে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বৃদ্ধি, গর্ভকালীন জটিলতার ব্যবস্থাপনা ও প্রয়োজনীয় জরুরি প্রসূতি সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘ডিমান্ড সাইড ফাইন্যান্সিং মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম’ চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৫৫টি উপজেলায় এ কার্যক্রম চলমান।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জিএম সালেহ উদ্দিন এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ